পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) সংস্থা শুধু পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবেই পরিচিত নয়, বরং এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী এবং বিতর্কিত সংস্থা হিসেবেও বিবেচিত। বিভিন্ন সময়ে আইএসআই-এর ভূমিকা আন্তর্জাতিক রাজনীতি, আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা, এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে গভীর প্রভাব রেখেছে। এ সংস্থাটি তাদের গোপন কার্যক্রম, রাজনৈতিক ও সামরিক প্রভাব, এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের কর্মধারার জন্য ব্যাপকভাবে আলোচিত ও সমালোচিত। এই প্রতিবেদনে আইএসআই-এর ইতিহাস, কার্যক্রম, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতিতে এর ভূমিকা, এবং ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আইএসআই-এর ইতিহাস ও উত্থান:
১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সময় আইএসআই-এর গোড়াপত্তন ঘটে। শুরুতে এটি সামরিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমের প্রতি নজর রাখার জন্য প্রতিষ্ঠিত হলেও, পরে এটি দেশের নিরাপত্তা, কৌশলগত পরিকল্পনা, এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলোতেও ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়ে। ১৯৫০ এবং ১৯৬০-এর দশকে সংস্থাটি সামরিক শাসকদের সঙ্গে কাজ করে দেশের রাজনীতি ও প্রশাসনে নিজেদের স্থান দৃঢ় করে।
আইএসআই-এর ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই। এই সময় আমেরিকার সিআইএ-এর সঙ্গে মিলে আইএসআই আফগান মুজাহিদিনদের সহযোগিতা করতে শুরু করে। এই সহযোগিতা তাদের জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতি এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মুজাহিদিনদের সমর্থনের মাধ্যমে তারা সোভিয়েত বাহিনীকে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়, যা আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত বাহিনীর প্রস্থানের অন্যতম কারণ ছিল। এর মাধ্যমে আইএসআই নিজেদের কার্যক্রমকে শুধুমাত্র জাতীয় সীমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেনি, বরং আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে দেয়।
গোপন অপারেশন এবং আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতি:
আইএসআই-এর কার্যক্রম কেবল পাকিস্তানের নিরাপত্তার সাথেই সম্পর্কিত নয়, এটি দক্ষিণ এশিয়া এবং বিশ্বমঞ্চে তাদের কৌশলগত প্রয়োগের জন্যও বিশেষভাবে পরিচিত। কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে উত্তেজনা বিদ্যমান, সেখানে আইএসআই-এর ভূমিকা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ১৯৮৯ সালে কাশ্মীরের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর উত্থানে আইএসআই-এর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ভারতের দাবি, আইএসআই কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করে আসছে, যদিও পাকিস্তান সরকার সবসময়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূত্রে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, আইএসআই এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
এছাড়া ১৯৯৯ সালে কারগিল সংঘাতে আইএসআই-এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে মিলিত হয়ে তারা ভারতের কাশ্মীর অঞ্চলে প্রবেশ করে এবং কারগিলে সংঘাত সৃষ্টি করে। যদিও এই সংঘাতটি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সামরিক সংকট বাড়িয়ে তোলে, তবে এর মাধ্যমে আইএসআই কাশ্মীর ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে চেয়েছিল।
আফগানিস্তানের প্রসঙ্গেও আইএসআই-এর কার্যক্রম খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় সংস্থাটি আফগান মুজাহিদিনদের প্রশিক্ষণ এবং সমর্থন দিয়ে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে। তারা শুধু সোভিয়েত বিরোধী যুদ্ধেই অংশ নেয়নি, বরং তালেবানদের উত্থানের পেছনেও সক্রিয় ছিল। পাকিস্তান তালেবানদের ব্যবহার করে আফগানিস্তানে নিজেদের কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে, যা পরবর্তীতে তালেবান সরকারের মাধ্যমে কার্যকর হয়। তবে এই নীতি তাদের জন্য উভয় সংকট তৈরি করে, কারণ তালেবান এবং অন্যান্য জঙ্গি সংগঠন পরবর্তীতে পাকিস্তানের নিজস্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়। বিশেষ করে ৯/১১ হামলার পর তালেবানদের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের কারণে আন্তর্জাতিক সমালোচনা বাড়তে থাকে।
তালেবান এবং আফগানিস্তানের ভবিষ্যত:
২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর আইএসআই-এর ভূমিকা আবারও আলোচনায় আসে। মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করার পর তালেবানরা ক্ষমতা দখল করলে, আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন ওঠে যে, আইএসআই কিভাবে তালেবানদের সাহায্য করেছিল। আফগানিস্তানের নতুন রাজনৈতিক অবস্থার কারণে আইএসআই-এর ভূমিকা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বর্তমানে তালেবান সরকার তুলনামূলকভাবে আরও স্বাধীন এবং নিজেদের নীতিমালা তৈরি করতে শুরু করেছে। এর ফলে আইএসআই-এর ওপর তাদের নির্ভরতা কিছুটা কমলেও, দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক রয়ে গেছে।
আইএসআই-এর সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আফগানিস্তানে তালেবান সরকারকে সমর্থন করার পাশাপাশি তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা। তালেবানদের উত্থান এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী প্রচেষ্টার মধ্যে একটি ভারসাম্য রক্ষা করতে হচ্ছে, যা সহজ নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কার্যক্রমে অংশ নিয়েও তালেবানদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা একটি অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতি তৈরি করে।
চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং আইএসআই:
চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী জোট। এই কৌশলগত জোটের পিছনে আইএসআই-এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (BRI) অংশ হিসেবে চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর (CPEC) প্রকল্পটি পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য একটি বড় মাইলফলক। তবে CPEC এর সফল বাস্তবায়ন আইএসআই-এর জন্য নতুন দায়িত্ব তৈরি করেছে, বিশেষ করে বেলুচিস্তান অঞ্চলে যেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো চীনের কর্মীদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।
বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন দমন করতে আইএসআই কঠোর নীতি অবলম্বন করেছে এবং চীনের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। এটি প্রমাণ করে যে, আইএসআই শুধু সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবেই কাজ করছে না, বরং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং কৌশলগত সম্পর্কের সুরক্ষায়ও অবদান রাখছে।
তবে, বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন এবং চীনের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে গিয়ে, আইএসআই-এর জন্য পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংকট আরও গভীর হয়েছে। CPEC প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে স্থানীয় জনমনে অসন্তোষ বৃদ্ধি পেয়েছে। আইএসআই-এর উপর দায়িত্ব পড়েছে একদিকে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা, অন্যদিকে চীনের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখা, যা এক গভীর ভারসাম্য রক্ষার বিষয়।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং আইএসআই-এর কৌশলগত ভূমিকা:
ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে আইএসআই-এর ভূমিকা শুরু থেকেই বিতর্কিত। কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলমান, এবং ভারতের অভিযোগ আইএসআই কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়ে সমর্থন করছে। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর থেকে এই অভিযোগ আরও জোরালো হয়, কারণ তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, লস্কর-ই-তৈয়বা-র মতো গোষ্ঠীগুলো আইএসআই-এর সহায়তা পেয়েছিল।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা এবং কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাতে সহায়তা করার অভিযোগে আইএসআই বরাবরই ভারতের সমালোচনার মুখে পড়েছে।
আইএসআই-এর দ্বৈত ভূমিকা এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা-
আইএসআই-এর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সাথে যোগসাজশের বিষয়ে। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো দেশগুলো ৯/১১ পরবর্তী সময়ে আফগানিস্তানে যুদ্ধ পরিচালনার সময় আইএসআই-এর ওপর সন্দেহ প্রকাশ করে। তালেবান এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাথে আইএসআই-এর যোগাযোগ এবং সহযোগিতার প্রমাণ পাওয়া যায় বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূত্র দাবি করে। এর ফলে, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাকিস্তানের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
অন্যদিকে, আইএসআই পাকিস্তানের ভূখণ্ডে এবং আঞ্চলিক প্রভাব রক্ষার জন্য একদিকে সন্ত্রাসবাদকে মোকাবিলা করার দাবি করে, এবং অন্যদিকে কৌশলগত স্বার্থে কিছু সন্ত্রাসী সংগঠনকে প্রশ্রয় দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এটি পাকিস্তানের জন্য একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যেখানে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হয়েও আইএসআই-এর কার্যক্রম সন্দেহের উর্ধ্বে নয়। বিশেষত, আইএসআই-এর দ্বৈত ভূমিকা—একদিকে পাকিস্তানের আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষা করা এবং অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বিরোধী প্রচেষ্টা—এই বিতর্কের মূল কেন্দ্রবিন্দু।
বর্তমান চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা:
বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আইএসআই নতুন কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। একদিকে, দক্ষিণ এশিয়ায় চীন-ভারত দ্বন্দ্বে পাকিস্তান এবং আইএসআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চীনের সাথে পাকিস্তানের জোট আরও দৃঢ় হলেও, আঞ্চলিক রাজনৈতিক এবং সামরিক চাপের ফলে আইএসআই-কে কৌশলগতভাবে আরও বিচক্ষণ হতে হচ্ছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক গত কয়েক বছরে কিছুটা জটিল হয়েছে, বিশেষত আফগানিস্তান পরিস্থিতি ও তালেবানদের বিষয়ে। আইএসআই-কে কেবল দেশের নিরাপত্তার জন্য কাজ করলেই চলবে না, বরং বৈশ্বিক পরিসরে নিজেদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
আভ্যন্তরীণভাবে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামরিক বাহিনীর আধিপত্য দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলছে, যেখানে আইএসআই প্রায়ই নিজেদের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে, সাম্প্রতিককালে ইমরান খান সরকারের পতনের সময় আইএসআই-এর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সংস্থাটি দেশের রাজনীতিতে কিভাবে নিজেদের প্রভাব খাটাবে এবং তা কেমন করে ভারসাম্যপূর্ণ রাখবে, তা ভবিষ্যতে তাদের কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক হবে।
আইএসআই-এর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা
আইএসআই-এর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে প্রধান হলো তাদের কৌশলগত পদক্ষেপের ফলে দেশীয় নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা। দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য, বিশেষ করে ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে, আইএসআই-এর কাজ আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। চীনের অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং ভারতীয় শক্তির উত্থান মোকাবিলা করার জন্য আইএসআই-এর জন্য নতুন কৌশল গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া, আফগানিস্তানে তালেবান সরকারকে সমর্থন করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া আইএসআই-এর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই সংস্থাকে এধরনের জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে পাকিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে, যা তাদের পূর্ববর্তী কৌশলগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, আইএসআই-এর কার্যক্রম শুধুমাত্র পাকিস্তানের সামরিক বা কৌশলগত কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, এবং আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলে। কাশ্মীর ইস্যু, আফগানিস্তান পরিস্থিতি, এবং চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। যদিও আন্তর্জাতিক মহলে আইএসআই-এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে, তবে পাকিস্তানের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় এটি একটি অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আইএসআই-এর কার্যক্রমের দিকে নজর রাখা এবং তাদের কৌশল পরিবর্তনের উপর দৃষ্টি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই সংস্থার মাধ্যমে পাকিস্তান কিভাবে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষা করে এবং কিভাবে তাদের কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী করে, তা আগামী দিনের রাজনৈতিক ও সামরিক অবস্থানের ওপর অনেক প্রভাব ফেলবে। অতএব, আইএসআই-এর কার্যক্রম কেবল পাকিস্তানের জন্যই নয়, বরং গোটা দক্ষিণ এশিয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠছে।