নিজস্ব প্রতিনিধি- ফজলে রাব্বি ইমরান
দক্ষিণাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই, আবারও বন্যায় দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চল। হঠাৎ বন্যায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটের বিভিন্ন ইউনিয়ন সহ রংপুর ও গাইবান্ধার কিছু অঞ্চল ডুবে গেছে।
একটানা মুষলধারে বৃষ্টি ও উজানের পানি বৃদ্ধি হওয়ায় দুধকুমার, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি। ধান, মরিচ, বাদাম চাষের জমি সহ অনেক নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গিয়েছে। ফসল,রাস্তা ঘাট, বাড়িঘর, দোকানপাট সব কিছুই তলিয়ে যাওয়া সহ নদী ভাঙ্গনের ফলে মানুষ আতঙ্কিত অবস্থায় জীবন ধারণ করছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুসারে- দুধকুমার, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কমলেও এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি।
তিস্তা পাড়ে উলিপুর, রাজারহাট, চিলমারী উপজেলা সহ পার্শ্ববর্তী ৬-৭টি ইউনিয়নের চর ও নিম্নাঞ্চলের সব ঘরবাড়ি,রাস্তাঘাট, গ্রামীন প্রতিষ্ঠান সহ প্রায় সব কিছুই পানিতে ডুবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ পরিস্থিতিতে অবস্থান করছে। প্রায় ছয় শতাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়েছে রাজারহাট উপজেলাতেই। কুড়িগ্রাম কৃষি অফিস এর তথ্যমতে, তিন শতাধিক হেক্টর ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে।
মানুষের আধা পাকা ধানখেত হঠাৎ ডুবে একাকার। কিছু ধান কাটতে পারলেও বেশিরভাগ ধান, শাকসবজি, বাদাম ও মৌসুমি ফসল সহ সবকিছুই ডুবে গেছে বন্যার পানিতে। মানুষ হাহাকার করে বলছে, আমাদের চিন্তাও ছিলো না এমন ভাবে আমাদের সব শেষ হয়ে যাবে।
হঠাৎ করেই তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় ডুবে যাওয়া এলাকায় কাজ করছে আমাদের লোকজন, কি পরিমাণ ফসল পানিতে ডুবে গেছে তার হিসাব করা হচ্ছে বলে জানান, কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আলম।
রাজারহাট উপজেলায় প্রায় ৬শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কিছু পরিবারকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে বলে জানান- রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা বেগম।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, সন্ধ্যার মধ্যে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করবে। এছাড়া অন্যান্য নদ-নদীর পানিও কমতে পারে বলে আশা করছি। কিন্তু এখন আর বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভবনা নেই। তবে মুষলধারে বৃষ্টি হলে পানি প্রবাহের সীমা বাড়তে পারে!