ডেনমার্কের বিনিয়োগে বাংলাদেশের বন্দর ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পে নতুন সম্ভাবনা

বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে ডেনমার্ক। ঢাকায় নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার বুধবার সচিবালয়ে নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহের কথা জানান।

সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত মোলার বলেন, “ডেনমার্ক বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী এবং দীর্ঘদিনের অংশীদার। জলবায়ু পরিবর্তনসহ বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের সমমনা অবস্থান রয়েছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছরের মাইলফলকে দাঁড়িয়ে আমরা এখন বন্দর ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই।”

ডেনমার্কের বিনিয়োগের বিশেষ আগ্রহের বিষয় হলো চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় লালদিয়ার চর এলাকায় কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্প। ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত এ প্রকল্পে বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, “ডেনমার্কের বন্দর ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পে অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশের এ খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”

বাংলাদেশ সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বর্তমান সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য একটি নিরাপদ এবং স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করেছে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা ডেনমার্কের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং আশা করছি, ডেনিশ সরকার শিপইয়ার্ড নির্মাণে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দেবে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ এখন এমন যে, কোনো বিনিয়োগকারী হয়রানির শিকার হবেন না। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে আমরা তাদের বিনিয়োগ সুরক্ষিত রাখব।”

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পাট ও বস্ত্র শিল্পে ডেনমার্কের কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “ইউরোপে পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাট উৎপাদনকারী দেশ এবং এ খাতে দক্ষ জনশক্তি ও অবকাঠামো বিদ্যমান। ডেনমার্ক এ খাতে বিনিয়োগ করলে উভয় দেশই লাভবান হবে।

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশের চলমান উদ্যোগে ডেনমার্কের ভূমিকার কথা স্মরণ করে ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণের উন্নয়নে ডেনমার্ক সবসময় আমাদের পাশে থেকেছে। তাদের সহযোগিতা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”

বাংলাদেশ-ডেনমার্কের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির এই মুহূর্তে, ডেনমার্কের বিনিয়োগের আগ্রহ উভয় দেশের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। বন্দর অবকাঠামো এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পে ডেনিশ অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Tags

- Advertisement -