দখলকৃত খালের জলাবদ্ধতায় কৃষকদের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত

নাটোরের লালপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার মধ্যবর্তী ভবানীপুর বিলের জলাবদ্ধতা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে, যা প্রায় ১৬০০ বিঘা জমির ফসলের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, এই বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য মাত্র একটি সরকারি খাল থাকলেও অবৈধ দখলের কারণে তার অস্তিত্ব কার্যত নেই। ফলে কৃষকরা উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) লালপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এলাকার বাসিন্দারা একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। তারা সরকারি খালটি দখলমুক্ত করার জন্য এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ভবানীপুর বিল থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য খালটি লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খলিষাডাঙ্গা নদীতে গিয়ে পড়েছে। কয়েক বছর আগে সরকারি বরাদ্দের মাধ্যমে বড়াইগ্রাম সীমানার অংশ সংস্কার করা হলেও লালপুর সীমানায় খালের যে অংশটুকু রয়েছে, সেখানে প্রভাবশালীদের দ্বারা বিভিন্ন অস্থায়ী ও স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে অবৈধভাবে দখল করে রাখা হয়েছে। এর ফলে বিলের পানি নিষ্কাশন কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বিলের শত শত বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বছরও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় তারা ফসল ঘরে তুলতে উদ্বিগ্ন। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই জলাবদ্ধতার সমাধান না হলে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

স্থানীয় কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, “বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও খালটি সংস্কার করা হয়নি। প্রতিবছরই সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। খালটি সংস্কার করা হলে দুই উপজেলার হাজার হাজার বিঘা ফসলের জমি ও বসতভিটা রক্ষা পাবে।”

বহিষ্কারক কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, “বিলে আমার প্রায় ১০ বিঘা জমির ধান পানির নিচে ডুবে গেছে। খালের লালপুর অংশে পানি নিষ্কাশন না হলে এ দুটি বিলের সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।”

বড়াইগ্রামের জোয়াড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য কামাল হোসেন জানান, “সরকারিভাবে খালের বড়াইগ্রাম অংশ সংস্কার করা হলেও বারবার তাগাদা দিয়ে লালপুরের অংশ সংস্কার ও দখলমুক্ত না করায় প্রতিবছর হালকা বৃষ্টিতেই এ দুটি বিলের ফসল ডুবে যায়। এবারও অতিবৃষ্টিতে সব ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।”

এ বিষয়ে বড়াইগ্রামের ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস এবং লালপুরের ইউএনও মেহেদী হাসান জানান, তারা আবেদনটি পেয়েছেন এবং সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ সমস্যাটির স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেবেন।

এ অবস্থায় কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো এবং সমস্যাটির দ্রুত সমাধান না হলে, ভবিষ্যতে এর প্রভাব আরও ব্যাপক হতে পারে।

Tags

- Advertisement -