মালদ্বীপের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় মন্ত্রী সহ ২২৫ জনের নিয়োগ বাতিল

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহম্মদ মুইজ্জু তার দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মুইজ্জু ২২৫ জনের বেশি রাজনৈতিক নিয়োগ বাতিল করেছেন, যার মধ্যে সাতজন মন্ত্রীও রয়েছেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকারি ব্যয় হ্রাসের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সূত্রে পাওয়া খবরে জানা যায়, গত বছর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর মুইজ্জু সরকারি বিভিন্ন পদে যাদের নিয়োগ দিয়েছিলেন, তাদের অনেককেই অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মূলত, দেশটির অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি ব্যয় সংকোচন ও আর্থিক স্থিতিশীলতা ফেরানোর উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারী অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ৪৩ জন উপমন্ত্রী ও ১৭৮ জন অন্যান্য কর্মকর্তার নিয়োগও বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে প্রতি মাসে মালদ্বীপের সরকার প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার সাশ্রয় করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এই সিদ্ধান্তের পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, তা পরিষ্কারভাবে জানানো হয়নি।

মালদ্বীপের অর্থনৈতিক সংকটের পটভূমিতে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা বা বেলআউট গ্রহণের পরিকল্পনা আপাতত নেই বলে জানিয়েছে দেশটি। গত সেপ্টেম্বরে দেওয়া এক ঘোষণায় মালদ্বীপ সরকার জানিয়েছিল, তারা নিজেদের আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে চায় এবং এই লক্ষ্যে ব্যয় সংকোচনের নীতি গ্রহণ করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে মালদ্বীপের ভূরাজনৈতিক অবস্থান এক বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। দেশটির অর্থনীতির একটি বড় অংশ পর্যটন খাতের উপর নির্ভরশীল, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এসে দেশটির সাদা বালুর সৈকত ও প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করে। ১১৯২টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই দেশটিতে চীন ও ভারত দুটি প্রধান ঋণদাতা দেশ হিসেবে উপস্থিত। মুইজ্জুর জয়লাভের পর চীন মালদ্বীপে আরও তহবিল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা মুইজ্জু ‘নিঃস্বার্থ সহায়তা’ বলে অভিহিত করেছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ভারতের সঙ্গে তার পূর্বের বিরোধী অবস্থান সত্ত্বেও চীন ও ভারতের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। মালদ্বীপের অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণের জন্য উভয় দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি বলে তিনি মনে করছেন।

Tags

- Advertisement -