মেশিন লার্নিংয়ের ভিত্তি গড়ে পদার্থে নোবেল জয়

পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার জয় করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানী জন জে হোপফিল্ড এবং কানাডিয়ান বিজ্ঞানী জেফ্রি ই. হিন্টন। এই দুই বিজ্ঞানী কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংয়ের ভিত্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রাখার জন্য এ পুরস্কার লাভ করেছেন। সুইডেনের স্টকহোমে ৮ অক্টোবর দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস থেকে এই ঘোষণাটি দেয়া হয়।

নোবেল কমিটির ঘোষণায় বলা হয়েছে, “হোপফিল্ড এমন একটি কাঠামো তৈরি করেছেন, যা তথ্য সংরক্ষণ এবং পুনর্গঠন করতে সক্ষম। আর হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যা স্বাধীনভাবে ডাটার বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ ও আবিষ্কার করতে পারে। তাদের এই আবিষ্কারগুলো আজকের বৃহৎ নিউরাল নেটওয়ার্কগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

হোপফিল্ড এবং হিন্টনের কাজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং মেশিন লার্নিংয়ের উন্নয়নে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাদের উদ্ভাবিত মডেল এবং তত্ত্বগুলো বর্তমানের এআই প্রযুক্তির ভিত্তি তৈরি করেছে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে, যেমন- স্বয়ংচালিত গাড়ি, স্বয়ংক্রিয় ভাষান্তর, চিত্র বিশ্লেষণ এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে।

নোবেল বিজয়ী এই দুই বিজ্ঞানী পাবেন একটি নোবেল মেডেল, একটি সনদপত্র এবং ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১০ লাখ ৬৭ হাজার মার্কিন ডলার)।

এ বছর পদার্থে নোবেল পুরস্কারের এই ঘোষণা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির একটি নতুন যুগের প্রারম্ভ নির্দেশ করে, যেখানে মেশিন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানব জীবনে আরো গভীরভাবে প্রবেশ করবে।

গত বছর পদার্থে নোবেল পেয়েছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানী পিয়েরে আগোস্তিনি, জার্মান বিজ্ঞানী ফেরেন্স ক্রাউস এবং সুইডিশ গবেষক আন লিয়ের। তারা পদার্থের ভেতরে ইলেক্ট্রনের শক্তি বিনিময়ের পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেন এবং আলোক তরঙ্গের অ্যাটোসেকেন্ড পালস তৈরির পদ্ধতির উদ্ভাবনের জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।

নোবেল পুরস্কারের এই ঘোষণাগুলো একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ। সোমবার ৭ অক্টোবর চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। তারা মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং জিন নিয়ন্ত্রণে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা উদ্ঘাটন করেছেন।

আজ, ৯ অক্টোবর, ঘোষণা করা হবে রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম। আগামীকাল সাহিত্য বিভাগে বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে। আর শান্তিতে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে ১১ অক্টোবর। আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেয়া হবে ১০ ডিসেম্বর, আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে, সুইডেনের স্টকহোমে আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে।

নোবেল পুরস্কার শুধু বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের জন্য নয়, বরং মানবজাতির অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। হোপফিল্ড এবং হিন্টনের কাজ বিজ্ঞানী সমাজকে মেশিন লার্নিংয়ের অগ্রগতির নতুন পথে নিয়ে যাচ্ছে, যা আগামী দিনে আমাদের প্রযুক্তিগত উন্নতির সম্ভাবনাকে আরও বিস্তৃত করবে।

Tags

- Advertisement -