লেবাননে যুদ্ধবিরতির পক্ষে হিজবুল্লাহ

লেবাননের রাজনৈতিক মঞ্চে এখন উত্তপ্ত আলোচনা চলছে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে। বিশেষ করে ইসরাইল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে, লেবাননের সংসদ স্পিকার নাবিহ বেরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বেরি, যিনি হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত, ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানিয়েছেন হিজবুল্লাহর অন্যতম শীর্ষ নেতা নাঈম কাসেম।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) এক ৩০ মিনিটের টেলিভিশন বার্তায় নাঈম কাসেম স্পষ্টভাবে বলেন, “যুদ্ধবিরতির জন্য নাবিহ বেরির নেতৃত্বে যে রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, আমরা তাতে পূর্ণ সমর্থন জানাই।” তিনি আরও যোগ করেন, “যুদ্ধবিরতি কূটনৈতিকভাবে কার্যকর হলে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে শত্রুরা যদি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে যুদ্ধক্ষেত্রেই এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”

তবে, এই বিবৃতিতে একটি বিষয় স্পষ্টভাবে অনুপস্থিত ছিল—গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গ। এটাই প্রথমবারের মতো কোনো হিজবুল্লাহ শীর্ষ নেতার বক্তব্যে গাজা ইস্যু উপেক্ষিত থাকল। হিজবুল্লাহ, যারা হামাসের সাথে দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক কার্যক্রম চালিয়েছে, তাদের এই অবস্থান অনেকের কাছেই বিস্ময়ের কারণ হতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় হিজবুল্লাহ ইসরাইলের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। প্রায় এক বছর ধরে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলতে থাকে। বিশেষ করে সেপ্টেম্বর মাসে ইসরাইলের বিমান বাহিনী বৈরুত এবং এর আশেপাশের অঞ্চলে হামলা চালায়, যা সংঘাতকে নতুন মাত্রা দেয়। একাধিক বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন, যা সংগঠনের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হয়।

এরপর ইসরাইল লেবাননে সেনা পাঠায়, যার ফলে লেবানন সীমান্তে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী লড়াই। এ পর্যন্ত লেবাননের বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ, যা দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।

এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এবং গাজা প্রসঙ্গে হিজবুল্লাহর নীরবতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। বিশেষ করে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে কোনো বক্তব্য না দেওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে, হিজবুল্লাহ হয়তো বর্তমানে কেবলমাত্র লেবাননের পরিস্থিতির ওপর মনোনিবেশ করতে চায়। তবে এই বিষয়ে আরও আলোচনা এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কীভাবে গড়াবে, তা এখনো অনিশ্চিত।

Tags

- Advertisement -