হিরোশিমায় পরমাণু বোমার শিকারদের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিশ্ব শান্তির জন্য নতুন উদ্দীপনা

হিরোশিমা, জাপান – শুক্রবার, হিরোশিমার পরমাণু বোমা শিকারদের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার পর স্মৃতিসৌধে দর্শকদের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। তারা বিশ্বাস করেন, এই পুরস্কারটি বিশ্ব শান্তির প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং বিশ্ব নেতাদের এই ঐতিহাসিক স্থানে আসার প্রতি উদ্বুদ্ধ করবে।

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি, ১৯৪৫ সালের মার্কিন পরমাণু হামলার শিকারদের প্রতিনিধিত্বকারী নিহন হিদানকিও গোষ্ঠীকে এই পুরস্কার প্রদান করেছে। এই গোষ্ঠীটি বছরের পর বছর ধরে পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধের জন্য সংগ্রাম করে আসছে, এবং তাদের কঠোর পরিশ্রম আজ সম্মানিত হয়েছে।

হিরোশিমার পিস মেমোরিয়াল পার্কে বেড়াতে আসা ২১ বছর বয়সী শিক্ষার্থী উই তোরিসাও বলেন, “জাপানি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে নিশ্চিত করা যে, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে। আমাদের দেশ একমাত্র রাষ্ট্র, যা পরমাণু হামলার শিকার হয়েছে। এর পুনরাবৃত্তি অন্য কোথাও হতে পারে, তাই আমাদের এখনই প্রতিরোধ গড়তে হবে।”

আগামী আগস্টে বোমা হামলার ৮০তম বার্ষিকী উদযাপিত হবে, যা Survivors বা ‘হিবাকুশা’দের উত্তরাধিকার এবং পরমাণু অস্ত্রের বিষয় নিয়ে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করবে। অনেকেই এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাপানের পরমাণু অস্ত্রের বিপরীতে একটি আন্তর্জাতিক আওয়াজ তুলতে চান।

ফুকুওকা প্রদেশ থেকে স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনে আসা যাসুহিরো সুজুকি এই পুরস্কারকে “এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ” হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “পরমাণু শক্তি বিশ্বে উপকারী হতে পারে, তবে এর অপব্যবহার প্রতিরোধে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। আমি আশা করি, এই পুরস্কার বিশ্বজুড়ে এই ইস্যু নিয়ে চিন্তার নতুন সুযোগ তৈরি করবে।”

হিরোশিমার স্মৃতিসৌধে আসা দর্শকরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, এই নোবেল শান্তি পুরস্কারটি পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করবে এবং মানবতার জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এই পুরস্কার শুধুমাত্র হিবাকুশাদের সংগ্রামের স্বীকৃতি নয়, বরং এটি একটি শান্তির বার্তা, যা বিশ্বের প্রতিটি কোণে পৌঁছানোর প্রয়োজন।

সুতরাং, হিরোশিমার স্মৃতিসৌধে উপস্থিত দর্শকরা আশাবাদী, এই নোবেল শান্তি পুরস্কারটি বিশ্বে পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি মানবতার জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।

Tags

- Advertisement -