পানি ছাড়ার পূর্বাভাস উজানের দেশগুলোর দিতে হবে

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন যে, উজানের দেশগুলোকে পানি ছাড়ার নির্দিষ্ট সময় সম্পর্কে আগাম তথ্য জানাতে হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। আজ রোববার তিনি ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত ‘ক্ষমতায়ন: জলবায়ু সহিষ্ণু সমাজের জন্য নারী (ফেজ ২)’ প্রকল্পের বার্ষিক কমিউনিটি অফ প্র্যাকটিস (কপ) নেটওয়ার্ক কনভেনশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ আহ্বান জানান।

উক্ত অনুষ্ঠানে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা অপরিহার্য। বিশেষ করে উজানের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক ও তথ্য আদান-প্রদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উজানের দেশগুলোকে আগে থেকে বৃষ্টিপাত, পানি ছাড়ার সময় ও স্ট্রাকচারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তথ্য জানাতে হবে। উজান ও ভাটির দেশগুলোকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে, তবেই আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সামাল দিতে পারব।”

তিনি আরও বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট খাদ্য সংকট এড়াতে সরকার ইতোমধ্যেই নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জিরো কার্বন নির্গমনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে অর্থ সংগ্রহ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।”

নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হিসেবে বিশেষভাবে উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূলতার মধ্যে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। এজন্য অভিযোজনের জাতীয় পরিকল্পনায় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে সুইডেন দূতাবাসের হেড অফ ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান এবং ইউএন উইমেন-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলী সিং।

কনভেনশনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ‘উইমেন্স ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক’ ঘোষণা এবং পাঁচজন নারী উদ্যোক্তাকে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা’ শীর্ষক পদক ২০২৪ প্রদান। এই পদকপ্রাপ্ত নারীরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন এবং তাঁদের উদ্যোগগুলো সম্মানিত করা হয়।

সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন ও প্রশমন প্রচেষ্টায় নারীদের নেতৃত্ব এবং অংশগ্রহণ বাড়ানোর কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু সহনশীলতা ও লিঙ্গ সমতার ওপর অনুষ্ঠিত প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা মতবিনিময় করেন। পাশাপাশি কর্মশালা এবং বিভিন্ন প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিষয়গুলো আরো বিশদভাবে তুলে ধরা হয়।

এই অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ছিল, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা অপরিসীম, এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া জলবায়ুর প্রভাব কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।

Tags

- Advertisement -