অ্যানড্রয়েড ফোনের প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোডের ক্ষেত্রে গুগল যে নির্দিষ্ট শর্ত আরোপ করে, সেই বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। গুগলের এই শর্তের মধ্যে রয়েছে যে, ফোন কোম্পানিগুলোকে তিন বছরের জন্য গুগলের তৈরি অ্যাপগুলোকে ‘বাই ডিফল্ট’ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ, ওই অ্যাপগুলোই ফোনে ‘ইন-অ্যাপ’ হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে, কিন্তু গুগলের প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপ সংস্থাগুলো এই সুবিধা পায় না। এই একচেটিয়া ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রায় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিন আদালতের জুরি গুগলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে মতামত প্রকাশ করে। আদালতের বিচারক এর আগেও গুগল সার্চ ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই নতুন রায়ের ফলে একটি তিন সদস্যের পর্যবেক্ষক দল গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যারা নিশ্চিত করবে যে গুগল আগামীতে এই ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে।
আদালতের রায় ২০২৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে, তবে কিছু ক্ষেত্রে ১ জুলাই পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। গুগলকে একচেটিয়া ব্যবসা করতে না দেওয়ার জন্য এবং প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলোকে সমান সুযোগ দেওয়ার জন্য আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী অ্যানড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে। গুগলের এই একচেটিয়া বাজারে সার্চ ইঞ্জিন থেকে অ্যাপ পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই গুগলের আধিপত্য রয়েছে। গুগল এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের দাবি, আদালতের রায় কার্যকর হলে, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে যুক্তরাষ্ট্র তথা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ভোক্তাদের ওপর।
গুগলের ভাইস প্রেসিডেন্ট লি-অ্যানি মুলহল্যান্ড জানিয়েছেন, “আমরা আপিল করব। ইউজারদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করব। তাদেরকে কোনো সমস্যার মুখে ফেলতে চাই না আমরা।”
এছাড়া, অ্যানড্রয়েড সংস্থাগুলোকে গুগল এখন একটি শর্ত দেয়, যার মধ্যে রয়েছে হোম পেজে তাদের অ্যাপ স্টোর রাখতে হবে এবং গুগল অ্যাপগুলো প্রি-ইনস্টল করতে হবে।
এএফপি ও রয়টার্সের সংবাদ অনুযায়ী, গুগলের এই একচেটিয়া বাজার পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে ভবিষ্যতে গুগলের কার্যক্রম কীভাবে পাল্টাবে এবং ভোক্তাদের ওপর এর প্রভাব কেমন হবে, তা নিয়ে এখন সবার নজর থাকবে।
