ভিয়েতনামে দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি

ভিয়েতনাম চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০২৪ সালের এ সময়কালে দেশটির জিডিপি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে, যা গত বছর ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এ প্রবৃদ্ধি দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) সংশোধিত প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ০৯ শতাংশকে অতিক্রম করেছে। সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

শক্তিশালী রফতানি ও শিল্প উৎপাদন এবং ক্রমবর্ধমান বিদেশী বিনিয়োগ পূর্ব এশিয়ার দেশটির অর্থনীতিকে সম্প্রসারণে সহায়তা করেছে। যদিও, টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। টাইফুনটি উত্তর ভিয়েতনামে আঘাত হানার সময় তিন শতাধিক মানুষ মারা যান এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ও শিল্প উৎপাদনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে, ফলে ৩৩০ কোটি ডলারের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ভিয়েতনামের পরিসংখ্যান অফিস জানিয়েছে, বৈশ্বিক বাণিজ্যে উন্নতি, মূল্যস্ফীতি হ্রাস, আর্থিক শিথিলতা এবং শ্রম সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে, যার প্রভাব ভিয়েতনামের অর্থনীতিতে পড়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দেশটির রফতানি ১০ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে শিল্প উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ।

এ বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ভিয়েতনামে বিদেশী বিনিয়োগ ৮ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৭৩০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। দেশের রফতানি আয় ২০২৩ সালের তুলনায় ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ২৯ হাজার ৯৬৩ কোটি ডলার হয়েছে। অপরদিকে, আমদানি বেড়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ হয়ে ২৭ হাজার ৮৮৪ কোটি ডলার হয়েছে। এ অবস্থায়, ভিয়েতনামের উদ্বৃত্ত ২ হাজার ৭৯ কোটি ডলারের বেশি দাঁড়িয়েছে।

তবে, ভিয়েতনামে শিল্প উৎপাদন সম্পর্কিত এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের পারচেজিং ম্যানেজার ইনডেক্স (পিএমআই) আগস্টে ৫২ দশমিক ৪ থেকে সেপ্টেম্বরে ৪৭ দশমিক ৩-এ নেমে এসেছে। এই পতন গত বছরের নভেম্বর থেকে এ খাতের জন্য সবচেয়ে বড়।

ভিয়েতনাম সরকার এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৪ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এভাবে দেশটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

সার্বিকভাবে, ভিয়েতনামের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী, তবে টাইফুন ইয়াগির প্রভাব এবং শিল্প উৎপাদনের সঙ্কট চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

Tags

- Advertisement -