স্পেনের প্রতি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য। তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে সম্পদের যথেষ্ট অপচয় হয়েছে, যা অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করেছে। তাই এই মুহূর্তে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে।

এই মন্তব্যের সূত্রপাত ঘটে ঢাকায় স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্টিয়াগার সাথে বুধবার এক সৌজন্য সাক্ষাতে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে রাষ্ট্রদূত জানতে চান, স্পেন তাদের অভিজ্ঞতা ও সম্পদ কীভাবে বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রমে কাজে লাগাতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস স্পেনের এই প্রস্তাবের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের পথে হাঁটছে। এই সংস্কারগুলোকে সফল করতে আমরা যে কোনো ধরনের সহায়তা স্পেন থেকে সাদরে গ্রহণ করবো।” তিনি বিশেষভাবে স্বাস্থ্যসেবা এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের অবকাঠামোগত বিনিয়োগের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনে স্পেনের বিনিয়োগ ও সহযোগিতার সুযোগ তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “স্পেন আমাদের পোশাক শিল্পে আমদানি বৃদ্ধি করতে পারে এবং বিনিয়োগের মাধ্যমেও আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, উন্নয়ন খাতে স্পেনের কিছু অতিরিক্ত সহায়তা বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হবে।

প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি বর্তমানে স্পেনে কর্মরত রয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস স্পেনকে আরও শ্রমিক নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ থেকে প্রযুক্তিগত এবং অপ্রযুক্তিগত উভয় খাতে আরও শ্রমিক নিতে পারে স্পেন, যা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে।”

রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্টিয়াগা এই সাক্ষাতের সময় স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেজের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ইউনূসের হাতে একটি শুভেচ্ছা বার্তা তুলে দেন। সেই বার্তায় স্পেনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ইউনূসকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত স্পেনে অনুষ্ঠিতব্য উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান।

আন্তরিকতার প্রকাশ হিসেবে অধ্যাপক ইউনূস স্পেনের রানী সোফিয়াকে তার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান। তিনি রানির সাথে তার পূর্বের স্মৃতিচারণ করে বলেন, “রানির সাথে বাংলাদেশে তার বিভিন্ন সফরের স্মৃতিগুলো এখনও আমাদের মনে জ্বলজ্বল করে। আমি তাকে আবারও বাংলাদেশে স্বাগত জানাতে চাই।”

এই বৈঠক বাংলাদেশের সঙ্গে স্পেনের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা।

Tags

- Advertisement -