নিম্ন আদালতে চার হাজারের বেশি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ

সোমবার রাতে সরকার সাড়ে চার হাজারের বেশি আইন কর্মকর্তা নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর আদালত, বিশেষ জজ আদালতসহ বিভিন্ন নিম্ন আদালতে এই নিয়োগের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রমে গতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বিচারকাজে যে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছিল, তা এই নিয়োগের মাধ্যমে দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা জেলার ৬৭০ জন আইন কর্মকর্তার তালিকা প্রকাশ করে ইতোমধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ঢাকার পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) এবং জিপি (গভর্নমেন্ট প্লিডার) নিয়োগের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, অন্য জেলার তালিকা পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে।

আসিফ নজরুল জানান, পিপি, জিপি এবং অতিরিক্ত পিপির অভাবে বিচারকাজ বিঘ্নিত হচ্ছিল। গত সরকারের সময়ে সাড়ে চার হাজারের মতো আইন কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন, কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে বেশিরভাগই বিভিন্ন কারণে দায়িত্ব ছেড়ে চলে যান বা আত্মগোপনে চলে যান। ফলে সরকারকে নতুন করে এই আইন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হয়েছে।

এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ার বিষয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “বাইরে থেকে দেখে বোঝা কঠিন কেন এত সময় লাগছে। সাড়ে চার হাজার আইন কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল। এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করতে আমাদের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেক পরিশ্রম করেছেন।”

ঢাকা জেলার নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রায় ১০ হাজার আবেদন থেকে ৭০০ জন আইন কর্মকর্তাকে বাছাই করা হয়েছে। এই নিয়োগ ফাইলে তিনি স্বাক্ষর করেছেন বলে জানান।

মিথ্যা মামলা এবং হয়রানিমূলক মামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, “পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে অনেক মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, যেগুলো এখনও প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়নি। আমরা কেন এগুলো প্রত্যাহার করছি না, এ নিয়ে অনেকের প্রশ্ন। তবে আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা সহজ নয়। তদন্তাধীন মামলার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু যেসব মামলায় চার্জশিট দাখিল হয়েছে, সেগুলো আদালতের মাধ্যমে প্রত্যাহার করতে হয়। এমনকি সাজা হওয়া মামলার ক্ষেত্রেও আমরা নিজেরা কিছু করতে পারি না, শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তির আবেদন ছাড়া।”

আসিফ নজরুল আরও বলেন, “আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে, তবে বেআইনিভাবে কিছু করার ইচ্ছা বা সুযোগ আমাদের নেই।”

Tags

- Advertisement -