নারায়ণগঞ্জের যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম বাসভাড়া কমানোর দাবিতে রোববার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দিয়েছে। সংগঠনের নেতারা দাবি করেছেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ অন্যান্য রুটে গণপরিবহনে অযৌক্তিক ভাড়া আদায় করে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করা হচ্ছে।
এই হরতালের ডাক দিয়েছেন যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম। সংগঠনটির আহ্বায়ক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি এ দাবিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি ও তাঁর সংগঠনের নেতারা এ ঘোষণা দেন। সমাবেশে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাও সংহতি প্রকাশ করেছেন।
সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় ১৫ নভেম্বর, শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আগামীকাল ১৭ নভেম্বর রোববার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে এই হরতাল পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বক্তারা অভিযোগ করেছেন, পরিবহন খাতকে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির কেন্দ্র বানিয়েছে মাফিয়া-গডফাদাররা। রফিউর রাব্বির ভাষায়, “পরিবহন মাফিয়া-গডফাদার ওসমান পরিবার বছরের পর বছর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে কোটি কোটি টাকা লুট করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে গডফাদারদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়েছে। এ সুযোগে বাসভাড়া কমানো জরুরি।”
তাঁদের অভিযোগ, পরিবহন মালিকরা মাফিয়া গোষ্ঠীর কাছে চাঁদা দিয়ে অযৌক্তিকভাবে বাসভাড়া বাড়িয়ে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলছেন। এই ভাড়া কমানোর দাবিতেই তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন।
এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক, কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শিবনাথ চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক আলমগীর হোসেনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। বক্তারা বলেন, জনগণের স্বার্থে প্রশাসনের উচিত ভাড়া কমানো।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, বাসভাড়া না কমালে তারা হরতালের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ অচল করে দেবেন। যদি পরিবহন বন্ধ রাখার চেষ্টা করা হয়, তবে বিআরটিসি বাস চালানোর জন্য প্রশাসনকে বাধ্য করা হবে।
আগামীকাল হরতাল হলে এটি হবে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রথম হরতাল। বক্তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এর দায় প্রশাসনকে নিতে হবে। হরতালের আগে সংগঠনটি একাধিক কর্মসূচি পালন করেছে, যার মধ্যে সংবাদ সম্মেলন এবং মশাল মিছিল উল্লেখযোগ্য।
নারায়ণগঞ্জে বাসভাড়া কমানোর দাবিতে জনমত এখন তুঙ্গে। পরিবহন খাতে মাফিয়াদের আধিপত্য কমানো এবং জনগণের ভোগান্তি দূর করার দাবি তুলে ধরেছেন আন্দোলনকারীরা। প্রশাসনের উদ্যোগ না এলে এই হরতাল নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য আরও জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।