শরীয়তপুর সদর উপজেলার কীর্তিনাশা নদীতে ডাকাতি করে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার ধাওয়া ও গণপিটুনিতে দুই সন্দেহভাজন ডাকাত নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ডাকাত দলের ছোড়া গুলিতে আটজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ রাত একটার দিকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। নিহতদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে নয়টার দিকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীতে বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা করে ১০-১২ জনের একটি দল। খবর পেয়ে নৌযানের শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা ডাকাত দলকে ধাওয়া করেন। পালানোর সময় ডাকাতেরা গুলি ও ককটেল ছোড়ে এবং স্পিডবোটযোগে নদী পথে শরীয়তপুরের দিকে রওনা দেয়।
ডাকাতির খবর দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শরীয়তপুরের দাদপুর থেকে ডোমসার তেঁতুলিয়া পর্যন্ত নদীর দুই তীরে এবং নদীতে নেমে স্থানীয় জনতা ডাকাতদের প্রতিহত করতে থাকে। একপর্যায়ে ডাকাতরা ডোমসার তেঁতুলিয়া এলাকায় এসে একটি ইটভাটায় আশ্রয় নেয়। পরে স্থানীয়রা ইটভাটাটি ঘেরাও করে সাতজনকে আটক করে পিটুনি দেয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত ডাকাতদের উদ্ধার করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
পুলিশ ও চিকিৎসকের বক্তব্য-
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মুনতাসির খান জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ডাকাতদের গুলিতে আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে রাত ১২টার পর তিন দফায় আরও সাতজনকে হাসপাতালে আনা হয়, যাদের মধ্যে দুজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় ডাকাতির চেষ্টার পর পালানোর সময় স্থানীয় জনতার প্রতিরোধের মুখে পড়ে ডাকাত দল। নিজেদের রক্ষা করতে তারা গুলি চালায়। গণপিটুনিতে নিহত দুজনের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে। এ ঘটনায় ব্যবহৃত একটি স্পিডবোট ও একটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং বাকি ডাকাতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।