বাংলাদেশ ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের ক্যাটাগরি ‘সি’-তে সদস্যপদের জন্য প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। এই নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে নরওয়েসহ অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন কামনা করেছেন নৌপরিবহন ও শ্রম এবং কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (১৮ জুন) সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করতে এলে উপদেষ্টা এই সমর্থন কামনা করেন। সাক্ষাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ একটি শীর্ষস্থানীয় মেরিটাইম দেশ। দেশে একটি গভীর সমুদ্রবন্দরসহ চারটি সমুদ্রবন্দর এবং ৫৪টি প্রধান নদীবন্দর রয়েছে। প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটারের অভ্যন্তরীণ নৌপথ এবং বঙ্গোপসাগরের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বাংলাদেশের মেরিটাইম খাতের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। বাংলাদেশের জাহাজ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে এবং প্রতি বছর ৫,০০০-এর বেশি জাহাজ, ৯৫টি সমুদ্রগামী এবং ২০,০০০ উপকূলীয় জাহাজ দেশে আসে। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ নদী ও মেরিটাইম খাতের ওপর নির্ভরশীল। মাতারবাড়িতে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দর এই খাতের সম্ভাবনাকে আরো বাড়িয়েছে।
এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বাংলাদেশ আইএমওর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে এবং মেরিটাইম নীতি নির্ধারণে অবদান রাখছে। তিনি টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়ন এবং আইএমওর ২০৫০ সালের কার্বনমুক্ত লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। জাহাজ পুনর্ব্যবহারে বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ১২০-এর বেশি নারীসহ ২১,০০০ প্রশিক্ষিত নাবিক দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও জেন্ডার অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রাখছে।
উপদেষ্টা মাতারবাড়ি ও মোংলা গভীর সমুদ্রবন্দরের ডকইয়ার্ড নির্মাণে নরওয়ের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা এবং বন্দরগুলোকে গ্রিন পোর্টে রূপান্তরে সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি জাহাজ শিল্পে নরওয়ের বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেন।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক, উন্নয়ন সহযোগিতা এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতা রয়েছে। নরওয়ে জাহাজ নির্মাণ ও পুনর্ব্যবহার খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে এবং বিভিন্ন নরওয়েজিয়ান কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। তিনি পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আইএমও কনভেনশন বাস্তবায়ন, ডিজিটালাইজেশন এবং সমুদ্র দূষণ রোধে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রদূত আইএমও নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রার্থিতার পক্ষে নরওয়ের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বাংলাদেশের কাছে নরওয়ের প্রার্থিতার জন্য সমর্থন চান।