টানা ভারী বর্ষণে আবারও দুর্ভোগে পড়েছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দ্বীপের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ না থাকায় ঘরে ঘরে ঢুকছে বৃষ্টির পানি, পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত শতাধিক পরিবার।
শনিবার (২৮ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম। তিনি বলেন, “দ্বীপের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর পাশে কোনো ধরনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। ফলে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে জোয়ারের পানি ঢুকলে তা সহজে নামতে পারে না। এতে গ্রামের পর গ্রাম ডুবে যায় পানিতে।”
চেয়ারম্যানের ভাষ্য অনুযায়ী, বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকেই দ্বীপে নিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের অন্তত চারটি গ্রামের বহু বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। পানি সরতে দেরি হওয়ায় অনেকেই ঘরেই বন্দি হয়ে পড়েছেন।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, “সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০০টি পরিবার বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। আমরা তাদের জন্য জরুরি ত্রাণ সহায়তা পাঠাচ্ছি। একই সঙ্গে দ্বীপে দীর্ঘমেয়াদি পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।”
বাংলাদেশের সবচেয়ে দক্ষিণের ইউনিয়ন সেন্টমার্টিন, যার অপর নাম নারিকেল জিঞ্জিরা। এটি টেকনাফ উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখানকার জনসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। ইউনিয়নে মোট ১১টি গ্রাম রয়েছে, যেগুলোর অনেকগুলোতেই বর্ষায় জলাবদ্ধতা একটি পুরোনো সমস্যা।
স্থানীয়রা বলছেন, সেন্টমার্টিনে পর্যটনের বিকাশ হলেও মৌলিক অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি বললেই চলে। বর্ষা এলেই পানিতে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। ঘরে পানি ঢুকে পড়া, সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাওয়া, নোংরা পানি জমে মশাবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়া—এসব এখনকার নিয়মিত দৃশ্য।
দ্বীপবাসীর দাবি, স্বল্পমেয়াদে ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি এখানে একটি কার্যকর ড্রেনেজ সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে প্রতি বছর বর্ষায় একই বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবেন তারা।