বাড়িভাড়া বৃদ্ধিসহ একাধিক দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা রবিবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে পুলিশ দ্বারা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে লাঠিচার্জ, জলকামান এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়।
সকাল ৯টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকেরা একত্রিত হওয়া শুরু করেন। এই ‘লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি’তে অংশগ্রহণ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার কয়েক হাজার শিক্ষক ঢাকায় পৌঁছেছেন। দুপুরের দিকে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করলে আন্দোলনকারীরা সরে যেতে অস্বীকার করেন। এরপর লাঠিচার্জ এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়, যার ফলে শিক্ষকরা ছত্রভঙ্গ হন।
নোয়াখালীর মাদরাসার শিক্ষক মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা সরকারি শিক্ষকদের মতোই কঠোর পরিশ্রম করি, তবুও বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। বাড়িভাড়া হিসেবে আমরা মাত্র এক হাজার টাকা পাই। সরকার আমাদের ১৫০০ টাকা দেওয়ার কথা বলেছে, যা আমাদের কাছে এক প্রকার উপহাস ছাড়া কিছু নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আগে আমরা বাড়িভাড়া ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিলাম। মন্ত্রণালয় তখন কিছুটা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। পরে আমরা ২০ শতাংশ বাড়ানোর দাবিতে চাপ দিই। মন্ত্রণালয় আশ্বাস দেয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এটি আমাদের অত্যন্ত অসম্মানজনক মনে হচ্ছে।”
অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বাড়িভাড়া মাত্র ৫০০ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
লক্ষ্মীপুরের শিক্ষক মোসলেহ উদ্দিন বলেন, “আজকাল সবকিছুর খরচ বেড়েছে। এই ৫০০ টাকা বাড়ানো দিয়ে কী হবে?” শিক্ষকদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণের দাবি। ১৩ আগস্ট প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভে তারা ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই দাবি পূরণের জন্য সরকারের কাছে আল্টিমেটাম দেন।
দাবি পূরণ না হলে তারা ১৪ সেপ্টেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণদিবস ধর্মঘট এবং ১২ অক্টোবর থেকে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছিলেন। তবে, মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসের কারণে সেপ্টেম্বরে তারা কর্মবিরতি পালন করেননি।

