মার্কিন সরকারের দীর্ঘস্থায়ী শাটডাউন বা অচলাবস্থা শেষ হতে পারে—এমন আশায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে বৈশ্বিক তেলবাজারে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেলভোক্তা দেশ যুক্তরাষ্ট্রে যদি সরকারি কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়, তাহলে জ্বালানি ও বিমান চলাচলের চাহিদা বাড়বে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
বুধবার (১২ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮ সেন্ট কমে দাঁড়ায় ৬৫ দশমিক ০৮ ডলারে, আর মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম কমেছে ৭ সেন্ট, এখন প্রতি ব্যারেল ৬০ দশমিক ৯৭ ডলার। যদিও এর আগের দিন তেলের দাম বেড়েছিল ১.৫ থেকে ১.৭ শতাংশ পর্যন্ত।
এই স্থিতিশীলতার মূল কারণ—ওয়াশিংটনে আশাবাদ। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে বুধবার একটি বিল নিয়ে ভোট হওয়ার কথা, যা ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি সংস্থাগুলোর অর্থায়ন পুনরায় চালু করতে পারে। ফলে বাজারে আস্থার বার্তা ছড়িয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সরকার চালু হলে ভোক্তা আস্থা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়বে, যা তেলের চাহিদায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শাটডাউনের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে হাজারো ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিমান ভ্রমণ ও জেট জ্বালানির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলেও তারা মনে করছেন।
অন্যদিকে, তেলের দামের পেছনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো রাশিয়ার ওপর নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর এটি ছিল রাশিয়ার ওপর তার প্রথম সরাসরি পদক্ষেপ। নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে দেশটির দুটি প্রধান তেল কোম্পানি—লুকঅয়েল ও রসনেফট। এর ফলে বৈশ্বিক সরবরাহে চাপ তৈরি হচ্ছে, যা দাম বাড়ানোর দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের ইয়ানচাং পেট্রোলিয়াম রুশ তেলের বিকল্প সরবরাহ খুঁজছে এবং সিনোপেকের একটি শাখা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।
সব মিলিয়ে, মার্কিন শাটডাউন শেষ হওয়ার সম্ভাবনা এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার যুগপৎ প্রভাবেই বর্তমানে তেলবাজার অপেক্ষারত এক সূক্ষ্ম ভারসাম্যের মধ্যে রয়েছে।

