জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. আব্দুর রহমান খান এফসিএমএ বলেছেন, দেশের বাজেট জিডিপির ১৩ শতাংশ হলেও রাজস্ব আদায় মাত্র ৮ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ ঘাটতি মেটাতে ঋণ নিতে হচ্ছে। এই ঋণ পরিশোধে বড় ধরনের অসুবিধা তৈরি হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক অস্থিতিশীলতা বাড়াবে।
তিনি বলেন, জাতীয় ঋণের বোঝা অনেক বেড়ে গেছে। এতে টেকসই উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কল্যাণে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে রাজস্ব আয় বাড়ানো জরুরি। গতকাল (শনিবার) রাজধানীতে দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) আয়োজিত জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬–এর পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, করদাতাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বছর ‘নট ফর প্রফিট’ সংস্থা ও কিছু সরকারি সংস্থাকে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। রিটার্ন জমার সময়সীমা ৩০ নভেম্বর থেকে আরও ৯০ দিন বাড়ানো হয়েছে। তবে শুধু কর হার কমালে রাজস্ব বাড়বে না; করদাতাদের মানসিকতা ও প্রশাসনিক দক্ষতা—দুই ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আনতে হবে।
ভ্যাট ব্যবস্থার দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা মাত্র ৬ লাখ, যা খুবই কম। কর ও ভ্যাট—দুই ক্ষেত্রেই নন-কমপ্লায়েন্ট করদাতার সংখ্যা বেশি। ফলে নিয়ম মেনে কর দেওয়া ব্যক্তিদের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। এই সমস্যা সমাধানে রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থায় অটোমেশন, ডিজিটালাইজেশন ও সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন এনবিআরের করনীতি সদস্য এ কে এম বাদিউল আলম এবং ভ্যাটনীতি সদস্য মো. আজিজুর রহমান। তারা কর ও ভ্যাট নীতিমালার সংস্কার এবং বাস্তবায়ন কৌশল নিয়ে মতামত দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট মো. মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এফসিএমএ। তিনি বাজেট বাস্তবায়নে এনবিআর ও আইসিএমএবির পেশাগত সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

