Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Mon, Dec 8, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পথ রুদ্ধ করছে অস্থির ব্যাংক সুদহার
    অর্থনীতি

    অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পথ রুদ্ধ করছে অস্থির ব্যাংক সুদহার

    কাজি হেলালOctober 5, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    সুদহার
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাংক সুদহারের অস্থিরতা এবং দীর্ঘদিনের অতিরিক্ত উচ্চ সুদহার বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঋণের সুদ বেশি থাকলে ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের ঋণ নেওয়ার খরচ বেড়ে যায়, ফলে নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ কমে যায়। এর ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মন্থর হয়ে আসে এবং দেশের সামগ্রিক চাহিদা হ্রাস পায়। অপরদিকে স্থিতিশীল এবং যুক্তিসঙ্গত সুদহার ঋণ ও বিনিয়োগের প্রবাহকে উৎসাহিত করে, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।

    সঠিক সুদের হার অর্থনীতিতে বহুমাত্রিক ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি বিনিয়োগ, উৎপাদন এবং খরচের ভারসাম্য রক্ষা করে; একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। অত্যধিক উচ্চ সুদহার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শ্লথ করে এবং মন্দার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। অপরদিকে সুদহার অত্যন্ত কম হলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি হয়। ঘন ঘন সুদহারের ওঠানামা বিনিয়োগকারীর আস্থা কমিয়ে দেয় এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের পরিকল্পনাকে প্রভাবিত করে।

    সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হঠাৎ বৃদ্ধি এবং আমানতের সুদের হ্রাস শুধু সাধারণ গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীর আস্থা ক্ষুণ্ণ করছে না, বরং শিল্প ও উৎপাদন খাতের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাকেও ব্যাহত করছে। ব্যবসায়ীরা ঋণের অতিরিক্ত ব্যয় ও অনিশ্চয়তার কারণে নতুন বিনিয়োগে অনাগ্রহী, আর সঞ্চয়কারীরা ব্যাংকের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন, যা পুঁজির প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

    বর্তমান বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক ঋণ এবং মূল্যস্ফীতির চাপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই অস্থিরতা দেশের অর্থনীতিকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রেখেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও পূর্বনির্ধারিত সুদহার অপরিহার্য। শুধুমাত্র সুদহার বাড়ানো বা কমানো যথেষ্ট নয়; এর সঙ্গে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি, ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা এবং সুশাসন নিশ্চিত করাও সমানভাবে জরুরি।

    সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ভারসাম্যপূর্ণ সুদ বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, শুধুমাত্র সুদ কমালেই বিনিয়োগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে এটি ঠিক নয়। অতীতে ৬/৯ হারে ঋণ ও আমানতের সুদ নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবায়ন ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে প্রথমেই ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরানো এখন সবচেয়ে জরুরি।

    ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ব্যাংকের ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়ার ওপর আমরা পূর্ণতায় নির্ভর করি। কোনো ব্যক্তি বা গ্রাহকের জন্য আউটসাইড নির্দেশনা নেই। ঋণের হার নির্ধারণ প্রক্রিয়াজাত এবং স্বচ্ছ। এর ফলে ঝুঁকি কমে এবং বাজারে আস্থা বৃদ্ধি পায়।

    ল্যাবএইড গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ শামীম বলেন, ভারসাম্যপূর্ণ সুদহার বিনিয়োগ, ভোগ ও সঞ্চয়ের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করে। অগ্রাধিকার খাত যেমন: কৃষি, এসএমই, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গার্মেন্টস এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্পসুদে সহজ ঋণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অনেক ব্যবসায়ী এরই মধ্যে ৯ শতাংশের কম সুদ বিবেচনায় ঋণ নিয়ে শিল্প স্থাপন করেছেন। কিন্তু এখন ঋণের সুদ ১৪ থেকে ১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। যদি নীতিসুদহার এভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে ঋণের খরচ আরও বৃদ্ধি পাবে এবং সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে সংকট তৈরি হবে।

    বর্তমান পরিস্থিতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমিয়েছে, যা অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিকে দুর্বল করে। তাই দেশের অর্থনীতিকে পুনরায় গতিশীল করতে ভারসাম্যপূর্ণ সুদহার নির্ধারণ, ব্যবসায়বান্ধব পরিবেশ তৈরি এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। সংক্ষেপে বলা যায়, দেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ব্যাংক সুদহারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, নীতি সুদহারকে যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা এবং ব্যবসায়িক পরিবেশকে সহজ ও স্বচ্ছ করা একান্ত প্রয়োজন। এটি না হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা কেবল কাগজেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।

    অস্থির ব্যাংক সুদহারের প্রভাব অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে। সুদের হার বেড়ে গেলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ঋণ গ্রহণ ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে, ফলে তারা নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হয় এবং অনেক সময় সম্প্রসারণমূলক কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে কর্মসংস্থানের ওপর। বিনিয়োগ কমলে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রবণতা বাড়ে, বেকারত্ব বৃদ্ধি পায় এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম ধীর হয়ে পড়ে।

    উচ্চ সুদহারের কারণে শুধু বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানই কমে না, বরং বাজারে চাহিদা হ্রাস পায়। মানুষ ও প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ নিতে অনাগ্রহী হলে ভোগ ও উৎপাদন কমে যায়, যা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে মন্থর করে দেয়। এই অবস্থায় অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা টিকে থাকতে না পেরে দেউলিয়ার ঝুঁকিতে পড়ে, যা অর্থনীতির ভেতরে অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দেয়।

    অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায়ই নীতি সুদহার বাড়ায়। যদিও এটি মুদ্রাস্ফীতিকে কিছুটা কমাতে সাহায্য করে, তবে এর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পায়। এই কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, একদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা এবং অন্যদিকে প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সুদহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসার ঋণ ব্যয় বেড়েছে। অনেক উদ্যোক্তা যারা ৯ শতাংশ হারে ঋণ নিয়ে শিল্প স্থাপন করেছিলেন, তারা এখন ১৪–১৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে এবং ব্যবসার টেকসই প্রবৃদ্ধি ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

    বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘন ঘন সুদহার ওঠানামা করলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হয়, যা দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প যেমন: অবকাঠামো উন্নয়ন বা সবুজ প্রযুক্তি বিনিয়োগে বড় বাঁধা সৃষ্টি করে। একই সঙ্গে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও ঝুঁকির মুখে পড়ে, কারণ অনিশ্চিত বাজার পরিবেশে খেলাপি ঋণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

    সাম্প্রতিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, ডলারের সংকট, আমদানি ব্যয়ের চাপ এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, সুদের হারকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখা এখন সময়ের দাবি। স্থিতিশীল ও যুক্তিসঙ্গত সুদহার ছাড়া অর্থনীতিতে সুষম প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এই ক্ষেত্রে নীতিগত স্বচ্ছতা এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা অপরিহার্য, যাতে একদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হয়, অন্যদিকে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ধারাও অব্যাহত থাকে।

    কেন অর্থনীতিতে ভারসাম্যপূর্ণ সুদহার অপরিহার্য?
    অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অনেকাংশেই নির্ভর করে সুদের হারের উপর। একটি ভারসাম্যপূর্ণ সুদহার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, অর্থনৈতিক অস্থিরতা কমায় এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য তাই সুদের হারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। সুদহার অতিরিক্ত বেড়ে গেলে ব্যবসা ও শিল্প খাতে বিনিয়োগ কমে যায়, কারণ ঋণ নেওয়ার খরচ অনেক বেড়ে যায়। এতে উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যায়। আবার সুদহার অতি কম হলে সঞ্চয়কারীরা নিরুৎসাহিত হন, যার ফলে ব্যাংকিং খাতে পুঁজি সংকট তৈরি হয়। তাই সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে একটি ভারসাম্য রক্ষা করতে সুদের হারকে এমন এক স্তরে রাখতে হয়, যা অর্থনীতিকে সচল রাখবে।

    স্থিতিশীল সুদহার বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ায়। যখন ঋণের খরচ পূর্বানুমেয় ও যুক্তিসঙ্গত হয়, তখন ব্যবসায়ীরা দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পে ঝুঁকি নিতে আগ্রহী হন। এর ফলে নতুন শিল্প স্থাপন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ এবং সবুজ জ্বালানির মতো ভবিষ্যতমুখী খাতে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। বাস্তবে দেখা গেছে, হঠাৎ সুদহার বৃদ্ধি ব্যবসা খাতের ওপর নেতিবাচক চাপ সৃষ্টি করে। অনেক উদ্যোক্তা যারা ৯ শতাংশ সুদ বিবেচনায় ঋণ নিয়ে শিল্প স্থাপন করেছিলেন, তারা এখন ১৪–১৫ শতাংশ সুদ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন। এই প্রবণতা চলতে থাকলে ব্যবসার খরচ আরও বেড়ে যাবে এবং অর্থনীতিতে নতুন করে সংকট তৈরি হবে।

    এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত নীতি সুদহারকে এমনভাবে নির্ধারণ করা, যা বিনিয়োগ, উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের ধারাকে সহায়তা করে। একটি স্বচ্ছ ও তথ্যভিত্তিক সুদনীতি শুধু ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরিয়ে আনবে না, বরং সামগ্রিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা তৈরি করবে।

    বর্তমানে বৈশ্বিক বাজারে মুদ্রাস্ফীতির চাপ, বৈদেশিক ঋণের বাড়তি বোঝা এবং আমদানি ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। এই বাস্তবতায় সুদের হারকে স্থিতিশীল ও যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে রাখা এখন অতীব জরুরি। একটি ভারসাম্যপূর্ণ সুদহারই অর্থনীতিকে গতিশীল রাখবে, ব্যবসা ও কর্মসংস্থান বাড়াবে এবং দীর্ঘমেয়াদে টেকসই উন্নয়নের পথ সুগম করবে।

    সমাধান: অস্থির সুদহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন ভারসাম্যপূর্ণ নীতি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই রাখতে হলে ব্যাংক সুদহারকে একটি স্থিতিশীল ও যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে রাখা অপরিহার্য। কারণ অস্থির বা অতিরিক্ত উচ্চ সুদহার বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে, কর্মসংস্থান কমিয়ে দেয় এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে শ্লথগতি তৈরি করে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য নীতি নির্ধারকদের প্রথম কাজ হওয়া উচিত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা। একটি স্বচ্ছ ও কার্যকর নীতি জনগণকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আস্থাশীল করে তুলবে এবং অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে।

    শুধু মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ নয়, বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণপ্রাপ্তি সহজ করতে হবে এবং এমন নীতি গ্রহণ করতে হবে যাতে শিল্প, অবকাঠামো ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে উৎসাহ বাড়ে। বিশেষ করে উৎপাদনশীল খাতে কম সুদে ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা গেলে প্রতিষ্ঠানগুলো আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, উৎপাদন সম্প্রসারণ এবং নতুন শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হবে। এর ফলে কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে।

    ঋণ প্রবাহের স্থিতিশীলতাও একটি বড় শর্ত। সুদের হার এমনভাবে নির্ধারণ করা দরকার, যাতে ভোক্তাদের ব্যয় বাড়ে এবং ব্যবসার জন্য ঋণের খরচ সহনীয় থাকে। এতে বাজারে চাহিদা বাড়বে, আয়ের স্তর উন্নত হবে এবং মূলধন বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি একটি স্থিতিশীল আর্থিক বাজার গড়ে তুলতে হবে, যা ব্যাংক ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে।

    নীতিগতভাবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্থিতির মধ্যে সুষম ভারসাম্য বজায় রাখা। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এমন নীতি প্রণয়ন করতে হবে, যা একদিকে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করবে, অন্যদিকে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে উৎসাহিত করবে। এই ক্ষেত্রে তথ্যভিত্তিক এবং বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া নীতি গ্রহণ করা জরুরি। এছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় মনোযোগী হতে হবে। পোর্টফোলিও বৈচিত্র্যকরণ, হেজিং ও আধুনিক ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জাম ব্যবহার করে তারা বাজারের অস্থিরতা মোকাবিলা করতে পারবে। এতে শুধু প্রতিষ্ঠানগুলোই সুরক্ষিত হবে না, বরং পুরো আর্থিক খাত স্থিতিশীল থাকবে।

    বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা, ডলারের সংকট, বৈদেশিক ঋণের চাপ এবং মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব বিবেচনা করলে স্পষ্ট হয় যে, সুদহারকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখা এখন সময়ের দাবি। একটি টেকসই অর্থনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন সুদের হারে স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগবান্ধব নীতি, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। এগুলোর সমন্বিত প্রয়াসই অর্থনীতিকে টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।

    অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য স্থিতিশীল ও যুক্তিসঙ্গত সুদহার অপরিহার্য। ঘন ঘন সুদহারের ওঠানামা ব্যবসা-বাণিজ্যের আস্থা নষ্ট করছে, বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত করে দিচ্ছে। বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতা, বৈদেশিক ঋণের চাপ ও অভ্যন্তরীণ মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে এখন সুদের হারকে একটি ভারসাম্যপূর্ণ পর্যায়ে আনতে হবে। নীতিনির্ধারকদের উচিত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে একটি স্থিতিশীল আর্থিক পরিবেশ নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে ব্যবসাবান্ধব নীতি, ঋণপ্রবাহের স্থায়িত্ব এবং ব্যাংক খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনা জরুরি। সঠিক নীতি গ্রহণ করা গেলে সুদহারের অস্থিরতা কাটিয়ে অর্থনীতি পুনরায় গতিশীল হবে, কর্মসংস্থান বাড়বে এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশ টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে অগ্রসর হবে।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    বাংলাদেশ

    নতুন বিনিয়োগের অভাবে দেশে বাড়ছে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য

    December 7, 2025
    অর্থনীতি

    বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ভোক্তা বাজার হবে বাংলাদেশ: বিডা চেয়ারম্যান

    December 7, 2025
    অর্থনীতি

    সম্ভাবনার দেশে পর্যটনখাত অবহেলিত

    December 7, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.