বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আজ (বৃহস্পতিবার) সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও বৈঠকে ছিলেন।
বৈঠকে দেশের উচ্চ ব্যাংক সুদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংক ঋণের সুদহার ১৫-১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কমেছে এবং খেলাপি ঋণের হারও অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি কমাতে সুদহার এক অংকের মধ্যে নামানো জরুরি।
বৈঠক শেষে এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর বলেন, “বর্তমানে দেশে সুদহার ১৪ শতাংশের ওপরে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা সাধারণত ১০-১১ শতাংশ সুদেই মুনাফা করতে পারে। এই উচ্চ সুদ ব্যবসাবান্ধব নয়। বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে, বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার ক্রমান্বয়ে কমিয়ে এক অংকে আনার আবেদন জানিয়েছি।”
ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, “নীতি সুদহার আগামী মুদ্রানীতিতেই এক অঙ্কে নেমে আসবে।” তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বন্যাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক ও রাজনৈতিক কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনের জন্য গঠিত কমিটির মেয়াদ সেপ্টেম্বরেই শেষ হয়েছে। এটি আরও ছয় মাস বৃদ্ধি করার প্রস্তাব ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ৫০ কোটি টাকার নিচের ঋণ পর্যালোচনার মাধ্যমে নীতি সহায়তা প্রদানের জন্য পৃথক কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। গভর্নর জানিয়েছেন, এতে কোনো সমস্যা হবে না।
প্রতিনিধিদল রফতানিমুখী শিল্পের ব্যাংকিং সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ কমিটি গঠনের দাবিও জানায়। ড. মনসুর সম্মত হন এবং নির্দেশ দেন একজন ডেপুটি গভর্নরকে এ কমিটির দায়িত্বে রাখার। এ কমিটিতে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএসহ রফতানি সংক্রান্ত অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিরাও অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

