বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী বা কেরানি হিসেবে হাবিবুর রহমানের কর্মজীবন শুরু হয়। শেষ হয় দেশের অন্যতম ক্ষমতাধর পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে।
২০১৩ সাল থেকে আওয়ামীবিরোধীদের দমন কর্মকাণ্ডে তিনি ছিলেন অগ্রণী। জুলাই বিপ্লবেও আন্দোলন দমনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ‘নির্দেশদাতা’ হিসেবে ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীতে তীব্র জনরোষের মুখে, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা হারার পর, তিনি ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে অবস্থান করে পলাতক আওয়ামী নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
হাবিবুর রহমান ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা রয়েছে। এছাড়া ঝুলছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও। তার বিরুদ্ধে আছে হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তোলার অভিযোগ।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত সূত্র জানায়, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ছত্রছায়া এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রত্যক্ষ সমর্থনে হাবিবুর আওয়ামী সরকারে নিরাপত্তা কৌশলের প্রধান ‘ভরসার মুখ’ হিসেবে উঠে আসেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি পুলিশে সীমাহীন দুর্নীতি, পোস্টিং-বাণিজ্য এবং নারী কেলেঙ্কারির সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র-জনতার ওপর রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের নামে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডেও নেতৃত্ব দেন তিনি।
গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অভিযোগ:
জুলাই বিপ্লবে ঢাকায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পেছনে হাবিবুর রহমানের সরাসরি ভূমিকা থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-১ তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। অভিযোগে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে হাবিব ঢাকায় আন্দোলন দমন অভিযানে নেতৃত্ব দেন। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় পুলিশের গুলিতে অন্তত ২৩ জন নিহত হন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, হাবিব নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে অধীনস্থ কর্মকর্তাদের গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। একই সময় রামপুরার নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে আমির হোসেন নামের এক তরুণকে লাফ দিতে বাধ্য করা হয়। এটি তখন সর্বত্র আলোচিত ঘটনা ছিল।
তারপর ৫ আগস্ট চানখাঁরপুলে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপরও গুলি চালানোর নির্দেশ দেন হাবিব। ট্রাইব্যুনালের তদন্তে উদ্ধার হওয়া অডিও ক্লিপে শোনা গেছে, তিনি অধীনস্থদের বলেন, ‘প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করো, গুলি করো।’ এই নির্দেশে ওইদিন ছয়জন নিহত হন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ হত্যাকাণ্ডগুলোকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বর্তমানে হাবিবুর রহমানের সঙ্গে সাবেক এডিসি রাশেদুল ইসলাম, ওসি মশিউর রহমান, এসআই তারিকুল ইসলাম এবং এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অভাবনীয় উত্থান:
হাবিবুর রহমানের জন্ম গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে। বাবা আব্দুল আলী মোল্লা এবং মা রাবেয়া বেগম প্রয়াত। শিক্ষাজীবন শুরু করেন চন্দ্রদিঘলিয়া মোল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর এসএম মডেল গভর্নমেন্ট হাই স্কুল ও সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে পড়াশোনা করেন। লেখাপড়া শেষ করে গোপালগঞ্জে একটি জাতীয় দৈনিকের স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবেও কাজ করেছেন। সূত্রে জানা গেছে, তার অভাবনীয় ক্ষমতার পিছনে ‘গোপালগঞ্জ ফ্যাক্টর’ এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক মূল প্রভাবক। তার উত্থান কোনো স্বাভাবিক পেশাগত দক্ষতার ভিত্তিতে হয়নি; বরং রাজনৈতিক আনুগত্যের পুরস্কার হিসেবে তা সম্ভব হয়েছে।
হাবিবুর রহমানের কর্মজীবন শুরু হয় পিএসসির তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী বা কেরানি হিসেবে। অভিযোগ আছে, অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া, ‘গোপালগঞ্জ কানেকশন’ এবং শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি বিসিএস পরীক্ষা দেন। ১৯৯৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি বাংলাদেশ পুলিশের ১৭তম বিসিএস কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং দুবার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পান।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তার ভাগ্য উজ্জ্বল হয়। দ্রুত তিনি প্রধানমন্ত্রীর ‘আস্থাভাজন’ হয়ে ওঠেন। অভিযোগ আছে, শেখ পরিবারের প্রভাবশালী সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে সামনে রেখে সরকার, দল ও পুলিশে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আনুগত্যের পুরস্কার হিসেবে বিএনপি-জামায়াতপন্থি কর্মকর্তাদের চিহ্নিতকরণ, গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ ও বদলির দায়িত্ব পান। তার নেতৃত্বে পুলিশে ব্যাপক দলীয়করণ শুরু হয়।
২০১২ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই পর্যন্ত তিনি ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন। অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের সংস্থাপন বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। পরে সদর দপ্তরের অ্যাডমিন ও ডিসিপ্লিন সেকশনের ডিআইজি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২২ সালে তিনি ডিএমপি কমিশনারের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ২০১৩ সালে জামায়াত-শিবিরের আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন পর্যন্ত প্রতিটি বিরোধী বা গণআন্দোলন দমনে তার ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ ও নির্মম।
পোস্টিংবাণিজ্য থেকে হাজার কোটি টাকার সম্পদ:
পুলিশে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি, পোস্টিংবাণিজ্য এবং হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর তিনি ডিএমপির ডিসি (হেডকোয়ার্টার) হিসেবে দায়িত্ব পান। মূলত তখন থেকেই তার বদলিবাণিজ্যের যাত্রা শুরু হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, ডিএমপিতে ওসি পদায়ন থেকে যেকোনো পদে পোস্টিংয়ের জন্য ৩০ লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ লেনদেন হতো হাবিবুরের নিয়ন্ত্রণে। ঢাকা জেলার এসপি হিসেবে পোস্টিং নিয়ে তিনি শিল্পকারখানা, মাদক ব্যবসা, ছিনতাইকারী চক্র এবং মামলাবাণিজ্য সিন্ডিকেটের ‘ত্রাণকর্তা’ হয়ে ওঠেন।
ডিআইজি হিসেবে ঢাকা রেঞ্জ ও পুলিশ সদর দপ্তরের প্রশাসন শাখায় বসে তিনি সারা দেশের পুলিশ বাহিনীর বদলিকে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করেন। কনস্টেবল নিয়োগ ও বদলিবাণিজ্যকে রীতিমতো ‘শিল্পে’ রূপ দেন। পুলিশের অস্ত্র, সরঞ্জাম ও অবকাঠামো নির্মাণ সংক্রান্ত কেনাকাটায়ও তার কমিশনবাণিজ্য ছিল ওপেন সিক্রেট।
কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষের একটি অংশ তিনি লেনদেন করতেন উত্তরার ‘আপন হিজড়া’ এবং মগবাজারের ‘রাখী হিজড়া’-এর মাধ্যমে। পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অ্যাডমিন ও ডিসিপ্লিন) থাকাকালীন বদলি ও নিয়োগবাণিজ্য করতেন তার চাচাতো ভাই মাহমুদ হাসানের মাধ্যমে। এছাড়া মুন নামে আরেকজনকেও নিয়োগ ও তদবিরবাণিজ্যে ব্যবহার করতেন।
অবৈধ টাকায় গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়:
পোস্টিংবাণিজ্য, জমি ‘দখল ও উদ্ধার’ বাণিজ্য এবং অপরাধী সিন্ডিকেটকে সুরক্ষা দিয়ে হাবিবুর রহমানের অর্জিত অবৈধ সম্পদের পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। দেশ-বিদেশে বিলাসবহুল স্থাপনা ও একাধিক ব্যবসায় তিনি এই কালো টাকা বিনিয়োগ করেছেন। দুর্নীতির অর্থে হাবিবুর ঢাকার সাভারে গড়ে তুলেছেন ‘হাবিব নগর’ ও ‘উত্তরণ পল্লী’ নামে দুটি আবাসিক এলাকা। এছাড়া সাভার, ভাকুর্তা, আশুলিয়া ও হেমায়েতপুরে বেনামে অসংখ্য জমি ও বাড়ি কিনেছেন।

সাভারের পোড়াবাড়ি এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামও পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘হাবিবুর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয়’। সেখানে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তার নাম লেখা হয় ‘অ্যাডিশনাল ডিআইজি (সংস্থাপন), বাংলাদেশ পুলিশ’। ২০১৭ সালে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল প্রতিষ্ঠানটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোডে জায়গা দখলের অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় যুব মহিলা লীগ নেতা মামলা করলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। গুলশানের তৎকালীন ডিসি এসএম মোস্তাক আহমেদ জানান, পুরো বিষয়টি ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’ ম্যানেজ করেছে। উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে সাততলা ভবন, রাজউক প্রকল্পের জমি, তুরাগ থানার বাউনিয়ার ধুলাবাড়ী এলাকায় পাঁচ কাঠা জমি তার নামে আছে। গোপালগঞ্জে বাবা-মায়ের নামে রাবেয়া-আলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। নিজের নামে সম্পদ না রাখলেও বিপুল অর্থ তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করেছেন।
হাবিব উত্তরণ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলতেন। ঢাকা জেলার এসপি থাকাকালীন পুরো সাভার-আশুলিয়াকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে ফাউন্ডেশনের নামে মোটা অঙ্কের চাঁদার বড় অংশ নিতেন তিনি।
প্রথমে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ডা. এনামুর রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ধর্ষণ মামলায় এনামের পক্ষ নেওয়ার পর তাদের রাজনৈতিক আঁতাত শুরু হয়। হাবিবের প্রভাবে এনাম ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হন এবং হাবিব পান আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা। হাবিবুর রহমান ক্ষমতার বলয় শক্ত করতে সাভারের সন্ত্রাসী মঞ্জুরুল আলম রাজীব ও তার ভাই ফখরুল আলম সমরকে নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাজীবকে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং সমরকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হতে সহায়তা করেন।
সাবেক ছাত্রদল নেতা ওবায়েদুর রহমান অভি হাবিবের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে নিয়মিত অর্থ জোগাতেন উত্তরণ ফাউন্ডেশনে। হাবিবের পৃষ্ঠপোষকতায় হাজী সেলিম আহমেদ গার্মেন্টস বন্ড চুরি ও স্বর্ণ ও ডলার পাচারে জড়িয়ে দ্রুত শিল্পপতি হন। প্রতি মাসে তিনি হাবিবকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতেন; হাবিব তার অস্ত্রের লাইসেন্সের সুপারিশও করতেন।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী জসীম উদ্দিন ও উত্তর ডিবির প্রধান মোহাম্মদ রাসেল মিলে স্বর্ণ ও অর্থপাচারের সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। মূল আর্থিক স্রোত হাবিবের কাছে যেত। বেদে সম্প্রদায়ের রমজান আহমেদকে হাবিব বানান সাভার পৌর কাউন্সিলর ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের পরিচালক। সরকারি অনুদানের বড় অংশও তিনি ফাউন্ডেশনে জমা করতেন। অভিযোগ আছে, হাবিবের ছায়াতলে বেদে ও পতিতাদের মাধ্যমে গোপন অপরাধচক্রও পরিচালিত হতো।
সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা দেওয়ান মো. মঈনউদ্দিন বিপ্লবও ছিলেন হাবিবুরের সহযোগী।
নারী কেলেঙ্কারি ও পলাতক হাবিবুর রহমান:
হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগও ব্যাপক আলোচিত। অভিযোগ ওঠে, তিনি পুলিশের অনেক নারী সদস্য এবং সাধারণ নারীকে তার পদ ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেছেন। নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনাও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
পুলিশ প্রশাসনে নারী সদস্যদের পোস্টিং, পদোন্নতি এবং সুবিধাজনক স্থানে বদলিতে তিনি অনৈতিক প্রভাব খাটাতেন। এছাড়া ক্ষমতার জোরে তিনি বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের পদ পাঁচ বছর ধরে আঁকড়ে রাখেন। ওই সময় কাবাডি ফেডারেশনের অর্থের অনিয়মের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে উঠেছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে হাবিবুর তড়িঘড়ি করে দেশ থেকে পালিয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তার বিস্ময়কর উত্থান বাংলাদেশের প্রশাসনিক ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পলাতক থাকার কারণে অভিযোগ প্রসঙ্গে হাবিবুর রহমানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

