বৈশ্বিক পর্যটনের মানচিত্রে এশিয়া এখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য। মালদ্বীপের নীল জলরাশি, নেপালের পাহাড় বা থাইল্যান্ডের সোনালি সৈকত—এশিয়ার প্রতিটি জায়গায় ভ্রমণপিপাসুদের ভিড় বাড়ছে। জাতিসংঘ পর্যটন সংস্থা ইউএনডব্লিউটিওর তথ্য অনুযায়ী, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পর্যটক সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চীন, ভারত, ভিয়েতনাম এমনকি অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা শ্রীলঙ্কাও ভিসা সহজীকরণ ও পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে পর্যটকদের ‘লাল গালিচা’ সংবর্ধনা দিচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ঠিক উল্টো পথে হাঁটছে। ভ্রমণ সতর্কতা, ভিসা জটিলতা এবং পর্যটকবান্ধব পরিবেশের অভাব দেশের আঞ্চলিক র্যাংকিংকে তলানিতে ঠেলে দিয়েছে।
পর্যটন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের পর্যটন সম্ভাবনা এককথায় অনন্য। প্রকৃতি ও ইতিহাসের মিলনে গড়ে উঠেছে অসাধারণ ভ্রমণ মানচিত্র। বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন সমুদ্রসৈকত, ইউনেসকো স্বীকৃত সুন্দরবন, সবুজ পাহাড়ের বিস্তৃত গালিচা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনার নদী জল, মহাস্থানগড় ও পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ঐতিহাসিক নিদর্শন, মোঘল ও প্রাচীন বাংলার শিল্প-সাহিত্যের সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং বৈচিত্র্যময় স্থানীয় সংস্কৃতি—সবই বাংলাদেশের পর্যটন সম্ভাবনার মূল সম্পদ। বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত তিনটি নিদর্শন—পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, ষাটগম্বুজ মসজিদ এবং মহাস্থানগড়—এই দেশের ঐশ্বর্য ও সম্ভাবনারই প্রতীক।
এখনও অনাবিষ্কৃত পর্যটন গন্তব্য:
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিপুল সম্ভাবনার দেশ হলেও বাংলাদেশ এখনো পর্যটন মানচিত্রে ‘অনাবিষ্কৃত’ গন্তব্য হিসেবেই রয়ে গেছে। দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভালো যাতায়াতব্যবস্থা, মানসম্মত হোটেল-মোটেল এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার অভাব স্পষ্ট। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরার জন্য প্রয়োজন পরিকল্পিত প্রচারণা, কিন্তু তা অনুপস্থিত। এছাড়া, পর্যটকদের প্রায়ই হয়রানির শিকার হওয়ার খবরও পাওয়া যায়, যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় বহু পিছিয়ে বাংলাদেশ:
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স ২০২৪ অনুযায়ী, ১১৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১২তম। মোট স্কোর মাত্র ২.৭০ (৭ পয়েন্টের স্কেলে)। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশের অবস্থান অত্যন্ত পিছিয়ে। ভারত ৩৯তম, শ্রীলঙ্কা ৬৩তম, নেপাল ১০৮তম এবং পাকিস্তান ১০১তম স্থানে রয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় চার বছরে বাংলাদেশের অবস্থানে কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। বরং ২০২১ সালের ১১০তম স্থান থেকে ২০২৪ সালে ১১২তম অবস্থানে অবনতি হয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর উন্নতি এই প্রেক্ষাপটে আরও স্পষ্ট। ভারত ৫৫তম স্থান থেকে ৩৯তমে উন্নীত হয়েছে, শ্রীলঙ্কা ৯৪তম থেকে ৬৩তমে উঠে এসেছে। এই তুলনায় বাংলাদেশের আপেক্ষিক পিছিয়ে পড়া দৃশ্যমান।
বিদেশি পর্যটকে আয় কমেছে, ভরসা দেশি পর্যটনে:
দেশের পর্যটন ব্যবসার বড় অংশ এখন দেশি পর্যটকনির্ভর হয়ে পড়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ বিদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে আয় করেছিল ৪৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালে এই আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ডলারে। প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ১২২ টাকা ধরে দেশের মুদ্রায় প্রায় ১৫৯ কোটি টাকা আয় কমেছে। তুলনামূলকভাবে, একই সময়ে ভারতের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫০২ কোটি ডলার, আর শ্রীলঙ্কার হয়েছে প্রায় ৩১৭ কোটি ডলার।
ট্যুর অপারেটররা জানিয়েছেন, চলতি বছর বিদেশি পর্যটকদের বুকিং গত বছরের তুলনায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। কক্সবাজার, সুন্দরবন বা সিলেটের মতো আন্তর্জাতিক মানের গন্তব্যগুলোতে ইউরোপ-আমেরিকা ও অন্যান্য দেশের পর্যটকদের আনাগোনা এখন নেই বললেই চলে।
পর্যটন শিল্পে ব্যবসায়ীদের ধারণা ও চ্যালেঞ্জ:
পর্যটনশিল্পের বাণিজ্য সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি মোহাম্মদ রাফিউজ্জামান বলেছেন, “সম্মিলিত উদ্যোগের অভাবে পর্যটনে বিকাশ হচ্ছে না। সংকট থেকে উত্তরণে পর্যটনবান্ধব নীতিমালা এবং সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।”
গ্যালাক্সি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও টোয়াবের সাবেক সভাপতি তৌফিক উদ্দীন আহমেদ বলেন, “বিদেশি পর্যটকরা নিরাপত্তা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য সুবিধা ও ভিসা সুবিধা বিবেচনা করে গন্তব্য বেছে নেয়। আমাদের প্রস্তুতি এখনো আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছায়নি। একটি কেন্দ্রীয় ‘ডেস্টিনেশন বাংলাদেশ’ প্রচারণা প্রয়োজন, যেখানে সরকার ও বেসরকারি খাত একসঙ্গে কাজ করবে।” রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভ্রমণ সতর্কতা পর্যটন খাতের জন্য গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি রেখেছে।
প্যাসিফিক এশিয়া ট্র্যাভেল অ্যাসোসিয়েশন (পাটা) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের মহাসচিব তৌফিক রহমান জানিয়েছেন, “দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের খবর এবং কিছু সহিংসতার চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এর সঙ্গে প্রায় ২০ দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা যুক্ত হয়েছে। আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো তাদের নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি রেখেছে। ফলে বিদেশি পর্যটক ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কমে গেছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. শাকের আহমেদ বলেন, “পর্যটন র্যাংকিং শুধু সংখ্যা নয়, এটি দেশের সামগ্রিক সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির প্রতিফলন। অপ্রতুল বিপণন, দুর্বল অবকাঠামো, নিয়ন্ত্রণমূলক জটিলতা এবং নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ—এই ফাঁকগুলোই আমাদের নিচের দিকে রাখছে।”
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভ্রমণ সতর্কতা পর্যটনে বাধা:
রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের পর্যটন খাতের জন্য গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং আরও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি রেখেছে। প্যাসিফিক এশিয়া ট্র্যাভেল অ্যাসোসিয়েশন (পাটা) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের মহাসচিব তৌফিক রহমান বলেন, “দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের খবর এবং কিছু সহিংস ঘটনার চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এর সঙ্গে প্রায় ২০ দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা যুক্ত হয়েছে। আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো তাদের নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে। ফলে বিদেশি পর্যটক ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কমে গেছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. শাকের আহমেদ বলেন, “পর্যটন র্যাংকিং শুধু সংখ্যা নয়, এটি দেশের সামগ্রিক সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির প্রতিফলন। অপ্রতুল বিপণন, দুর্বল অবকাঠামো, নিয়ন্ত্রণমূলক জটিলতা এবং নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ—এই ফাঁকগুলোই আমাদের নিচের দিকে নামিয়ে রাখছে।”
নামেই অগ্রাধিকার, বাস্তবে পর্যটনে অবহেলা:
২০২৩ সালে পর্যটন খাতকে জাতীয় শিল্পনীতিতে ‘অগ্রাধিকার খাত’ ঘোষণা করা হলেও বাস্তব চিত্র ম্লান। বাজেটে বরাদ্দ কম এবং উন্নয়ন প্রকল্প, বিদেশে ব্র্যান্ডিং ক্যাম্পেইন ও অবকাঠামো উন্নয়নের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ অপ্রতুল। তুলনায় থাইল্যান্ডের পর্যটন কর্তৃপক্ষ শুধু আন্তর্জাতিক বিপণনের জন্য বছরে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে।
বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বার্ষিক বিপণন বাজেট মাত্র ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকার মধ্যে। এই বাজেটে বৈশ্বিক পরিসরে বড় আকারের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা চালানো সম্ভব নয়।” কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘোষণার পরও তা স্থগিত করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কার্যকর হলে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরাসরি ফ্লাইট আসবে এবং পর্যটকের আগমন কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক ও পর্যটন করপোরেশন বোর্ডের পরিচালক মহিউদ্দিন হেলাল বলেছেন, “কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নেপাল, ভুটান, কুনমিং ও ভারতের সেভেন সিস্টারের মতো এলাকা থেকে পর্যটক আনার সুযোগ করে দেবে। কক্সবাজারের আকর্ষণ এখনও কাঁচামাল হিসেবে আছে, সেগুলোকে পর্যটনপণ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”
কাঠামোগত সমস্যা ও ভিসা জটিলতা পর্যটনকে বাধাগ্রস্ত করছে:
পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদেশি পর্যটকের অভাবের পেছনে কাঠামোগত সমস্যাগুলোও সমানভাবে দায়ী। ভিসা প্রাপ্তির জটিলতা একটি বড় অন্তরায়। বাংলাদেশ অনেক দেশের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা চালু করলেও ইউরোপ ও আমেরিকার বেশির ভাগ দেশের নাগরিকদের জন্য এখনো আগেভাগে ভিসা নেওয়া বাধ্যতামূলক। পর্যটন খাতের সঙ্গে যুক্তরা অভিযোগ করেন, এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ এবং স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে ই-ভিসা চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন, কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
পর্যটনের সমস্যার সমাধানে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি:
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের পর্যটনের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত ও সাহসী উদ্যোগ প্রয়োজন। পর্যটন খাতে বাজেট বরাদ্দ অন্তত পাঁচগুণ বাড়ানো, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে কার্যক্রম শুরু করা, নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করতে পর্যটন পুলিশের কাভারেজ বৃদ্ধি করা, ভিসা নীতিতে উদারতা এনে আরও বেশি দেশের জন্য ই-ভিসা সুবিধা চালু করা এবং আন্তর্জাতিক মানের হোটেল-রেস্তোরাঁসহ পর্যটনসেবায় কর ছাড় ও প্রণোদনা দেওয়া জরুরি বলে তারা মনে করছেন।
তাদের মতে, শক্তিশালী আন্তর্জাতিক বিপণন ক্যাম্পেইন চালু করা প্রয়োজন। এতে বাংলাদেশের ‘ইকো-ট্যুরিজম’, ‘কালচারাল ট্যুরিজম’ ও ‘অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম’-এর ওপর ফোকাস করে স্থানীয় সম্প্রদায়কে পর্যটন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হবে এবং তাদের জন্য আয় সৃষ্টি করা যাবে। টোয়াব সভাপতি মোহাম্মদ রাফিউজ্জামান বলেছেন, “ট্যুরিজম সাসটেইন করতে শুধু সরকার বা শুধু প্রাইভেট স্টেকহোল্ডার বা অন্য কোনো স্টেকহোল্ডারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। জনগণ যদি সচেতন না হয়, তাহলে কোনো উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে না।”
বেসরকারি বিনিয়োগ আছে, ভরসার পরিবেশ নেই:
দেশের পর্যটন খাতের মূল চালিকাশক্তি বেসরকারি উদ্যোক্তারা। কক্সবাজার, সিলেট এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে তারা তারকা মানের হোটেল-রিসোর্ট নির্মাণে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু বিনিয়োগের জন্য যে আস্থার পরিবেশ প্রয়োজন, তা এখনও তৈরি হয়নি। উদ্যোক্তারা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব, হয়রানিমূলক আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার অভাবের কারণে তারা বিনিয়োগের সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছেন না। পর্যটন বিশ্লেষক ড. শাকের আহমেদ বলেন, “আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে, কিন্তু তা বিশ্ববাজারে ‘সেল’ করার দক্ষতা ও বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন।”
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন সম্প্রতি বলেছেন, “আমরা একটি নীতিমালা প্রণয়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। দেশের সব পর্যটন স্থান এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের জন্য সবার জন্য আচরণবিধি তৈরি করা হচ্ছে।”
বিদেশি পর্যটকদের হারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব পর্যটকদের জন্য আমরা আরও ভালো ব্যবস্থা নিতে পারি। ভিসা জটিলতা এখন খুব একটা সমস্যা মনে হয় না। তবে লজিস্টিক সমস্যা রয়েছে। সামগ্রিকভাবে যখন আমাদের অবস্থার উন্নতি ঘটবে, তখন পর্যটনশিল্পও উন্নতি করবে।”

