পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তানে সাময়িকভাবে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্তত তিন সপ্তাহ এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে এবং এরপর পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজ্য বেলুচিস্তান আয়তনে সবচেয়ে বড় হলেও এটি সবচেয়ে জনবিরল, পশ্চাৎপদ ও দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চল। প্রায় ৩ লাখ ৪৭ হাজার বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এই রাজ্যে বসবাস করে মাত্র দেড় কোটি মানুষ। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকেই অঞ্চলটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলমান, যা ইসলামাবাদ সরকারের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসবাদ।
বেলুচিস্তান খনিজ সম্পদের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় সরকার এবং ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনের সঙ্গে যৌথভাবে এই অঞ্চলের খনিজ সম্পদ আহরণ করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় বেলুচ সম্প্রদায়ের অভিযোগ- এসব সম্পদ থেকে তারা কোনো সুবিধা পাচ্ছে না, বরং ইসলামাবাদ ও বেইজিং একতরফাভাবে সম্পদ লুট করছে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের অনুসন্ধান অনুযায়ী, সম্প্রতি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা খনিজ সম্পদ থেকে লাভের অংশ দাবি করেছিল। দাবি না মানায় তারা সেনা ও প্রশাসনিক স্থাপনায় একের পর এক হামলা চালাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বেলুচিস্তানের মুখপাত্র শহীদ রিন্দ রয়টার্সকে জানান, “মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কারণ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এই প্রযুক্তিকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় ও তথ্য বিনিময়ের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে।”
একজন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মকর্তা জানান, গত মঙ্গলবার বেলুচিস্তানে এক বোমা হামলায় এক সেনা কর্মকর্তা এবং দুই সেনা নিহত হন। প্রাথমিক তদন্তে এই হামলার সঙ্গে বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এরপরই নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

