দরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা বন্ধ—
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ২৫টি অঙ্গরাজ্য। দরিদ্র আমেরিকানদের জন্য খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি বন্ধের পরিকল্পনা নেওয়ায় তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় চার কোটি নিম্নআয়ের মানুষের জন্য পরিচালিত ‘সাপ্লিমেন্টাল নিউট্রিশন অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম’ (এসএনএপি) বা ‘ফুড স্ট্যাম্প’ কর্মসূচির অর্থায়ন বন্ধ ঠেকাতে অঙ্গরাজ্যগুলো আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। তারা প্রশাসনের কাছে দাবি করেছে, ৬০০ কোটি ডলারের জরুরি তহবিল ব্যবহার করে এই কর্মসূচি চালু রাখতে হবে।
তবে মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) জানিয়েছে, তারা জরুরি তহবিল ব্যবহার করবে না। নভেম্বরের মধ্যেই তহবিল ফুরিয়ে গেলে প্রোগ্রামটি বন্ধ হয়ে যাবে। সংস্থাটি বলছে, এই অর্থ মূলত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য জরুরি প্রয়োজনে ব্যয় করার জন্য নির্ধারিত।
এ নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। প্রায় এক মাস ধরে চলমান ফেডারেল প্রশাসনের অচলাবস্থারও এখনো কোনো সমাধান দেখা যায়নি। ইউএসডিএ এক ঘোষণায় বলেছে, “সহজভাবে বললে, কূপ এখন শূন্য”— অর্থাৎ খাদ্য সহায়তার অর্থ শেষ হয়ে গেছে।
ডেমোক্র্যাট অ্যাটর্নি জেনারেলদের নেতৃত্বে ২৫টি অঙ্গরাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসি এই মামলা করেছে। তাদের যুক্তি, প্রশাসন যদি জরুরি তহবিল ব্যবহার না করে, তবে তা আইনবিরুদ্ধ হবে এবং কোটি আমেরিকান খাদ্য কেনার সামর্থ্য হারাবে। মামলায় বলা হয়, “এসএনএপি বন্ধ হলে জনগণের স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে অনাহার, অপুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দেবে, যা শিশুদের মধ্যে মনোযোগহীনতা, ক্লান্তি, বিষণ্নতা ও আচরণগত সমস্যার মতো প্রভাব ফেলবে।”
অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, কানসাস, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ও উইসকনসিনসহ ২৫টি অঙ্গরাজ্য এই মামলায় অংশ নিয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বিশ্বমঞ্চে নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে ব্যস্ত, তখন তিনি নিজের দেশের মানুষকে অনাহারে ঠেলে দিচ্ছেন। এটি নির্মমতা এবং জনগণের প্রতি উদাসীনতার স্পষ্ট উদাহরণ।”
জবাবে ইউএসডিএ ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করে বলেছে, “এখন ডেমোক্র্যাটদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে— তারা কি নিজেদের দলের চরমপন্থি অংশের পাশে থাকবে, না সরকার পুনরায় চালু করে মায়েরা, শিশু ও দরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করবে।”

