সুদানের পশ্চিম দারফুরের গুরুত্বপূর্ণ শহর আল-ফাশি দখল করার পর প্যারামিলিটারি বা আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) কর্তৃক শতাধিক পুরুষকে হত্যা এবং জোরপূর্বক গুম করার ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও সাহায্যকর্মীরা জানান, আরএসএফ যোদ্ধারা বেসামরিক পুরুষদের নারী ও শিশুদের থেকে আলাদা করে নিয়ে যায় এবং পরে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে।
আল-ফাশি ছিল দারফুরে সুদানিজ সেনাবাহিনী (এসএএফ)-এর প্রধান ঘাঁটি। শহরটি আরএসএফের হাতে গেলে গৃহযুদ্ধের আড়াই বছরের প্রেক্ষাপটে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শহর থেকে পালিয়ে আসা আলখেয়ার ইসমাইল জানিয়েছেন, তার চোখের সামনে কয়েকশ’ পুরুষকে একটি জলাধারের কাছে নিয়ে গিয়ে জাতিগত বিদ্বেষমূলক ভাষায় গালাগালি করার পর গুলি চালানো হয়েছে।

ইসমাইলের কথায়, তার স্কুলের একজন পরিচিত ব্যক্তি তাকে হত্যা থেকে রক্ষা করেছেন।
রয়টার্স অনুসারে, চারজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং ছয়জন সাহায্যকর্মীর সাক্ষাৎকার নেয়ার ভিত্তিতে নিশ্চিতভাবে জানা যায়, আল-ফাশি থেকে পালানো মানুষদের কাছাকাছি গ্রামগুলোয় জড়ো করা হয়েছিল। পুরুষদেরকে আলাদা করার পরই গুলির শব্দ শোনা গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, তাদের কাছে খবর এসেছে যে শতাধিক বেসামরিক মানুষ এবং নিরস্ত্র যোদ্ধাদের আরএসএফ মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

মেডিসিন্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) জানিয়েছে, ২৬ অক্টোবর প্রায় ৫০০ বেসামরিক ও সামরিক ব্যক্তির পালানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং বেশিরভাগকে হত্যা বা আটক করা হয়েছে। বন্দিদের লিঙ্গ, বয়স বা জাতিগত পরিচয় অনুযায়ী আলাদা করা হয়েছে এবং মুক্তিপণের জন্য আটক রাখা হয়েছে।
অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় আরএসএফ এ ধরনের ঘটনা অস্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে, এসব শত্রু বা মিডিয়ার তৈরি গল্প। তারা উল্টো সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ এনেছে। তবে আরএসএফ প্রধান মোহামেদ হামদান দাগালো বুধবার রাতে যোদ্ধাদের বেসামরিকদের সুরক্ষা ও আটককৃতদের মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

