তাইওয়ানকে নতুন করে অস্ত্র বিক্রির প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মূল্য প্রায় ৩৩ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এই অনুমোদন দেয়—যা তার দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাইওয়ানের প্রতি প্রথম সামরিক সহায়তার সিগন্যাল হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন ডিফেন্স সিকিউরিটি কো–অপারেশন এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাইওয়ান তাদের এফ-১৬, সি-১৩০ এবং দেশীয় আইডিএফ যুদ্ধবিমানগুলোর জন্য নন-স্ট্যান্ডার্ড কম্পোনেন্ট, অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ, মেরামত সরঞ্জাম, অ্যাকসেসরিজ এবং রিপেয়ার-অ্যান্ড-রিটার্ন সাপোর্ট চেয়েছে। সেই চাহিদা বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র এই সামরিক যন্ত্রাংশ বিক্রিতে সম্মতি জানিয়েছে।
তবে এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। প্রয়োজন হলে চীন “সব ধরনের পদক্ষেপ” নিতে প্রস্তুত বলে সতর্ক করে বেইজিং।
এদিকে একই সময় তাইওয়ান ইস্যুতে চীন ও জাপানের মধ্যেও উত্তেজনা বাড়ছে। গত সপ্তাহে জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি পার্লামেন্টে বলেন, তাইওয়ানের ওপর হামলা হলে ‘সম্মিলিত আত্মরক্ষা’ নীতির আওতায় জাপান সেনা পাঠাতে পারে। বিশেষ করে যদি তাইওয়ানে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হয় এবং তা জাপানের নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
জাপানি প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। বৃহস্পতিবার চীনে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত কেনজি কানাসুগিকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় দেশটি। চীনা উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডং বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাইওয়ান নিয়ে “গুরুতর ভুল মন্তব্য” করেছেন, যা বেইজিং মোটেই সহ্য করবে না।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও সতর্ক করে বলেছে—যে কেউ চীনের ‘ঐক্য প্রচেষ্টায়’ হস্তক্ষেপ করলে কঠোর প্রতিশোধ নেওয়া হবে। মুখপাত্র লিন জিয়ান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “জাপানকে অবিলম্বে তাদের ভুল মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।”
তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের এই কূটনৈতিক টানাপোড়েন নতুন করে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে উত্তেজনার স্তর বাড়িয়ে দিল তা বলাই যায়।

