সারা দেশের শিক্ষার্থীরা সময়মতো পাঠ্যবই পেলেও বইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রাথমিকের বইয়ে নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার করায় অনেক ক্ষেত্রে ছাপা অস্পষ্ট হয়েছে। বাঁধাইয়ের কাজটাও যথাযথ হয়নি। ফলে এ বই কত দিন টিকবে তা নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), দাতাদের মধ্যে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথকভাবে পাঠ্যবইয়ের মান যাচাই শুরু করেছে।
এডিবির নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম পাঠ্যবইয়ের মান যাচাইয়ের জন্য ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এডিবি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এনসিটিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানও এ পর্যন্ত ১০০টি উপজেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিম্নমানের কাগজে ঝাপসা বই ছাপার প্রমাণ পেয়েছে।
বানান ভুল, শব্দ বিভ্রাট, লেখায় অসংগতি দেখা গেছে। বিশেষ করে বাংলা ও ইংরেজি বইয়ে গ্রামার এবং বাক্য গঠনে ত্রুটি, ছবির গুণগত মান খারাপ, অনেক বইয়ে ছবি অস্পষ্ট হয়ে গেছে বা ভুলভাবে মুদ্রিত হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ছবি গুরুত্বপূর্ণ। তাই এটি বড় সমস্যা, বাঁধাইয়ের ত্রুটি, বই খুললেই পৃষ্ঠা খুলে যাচ্ছে! কিছু বইতে পৃষ্ঠা অনুপস্থিত বা একই পৃষ্ঠা একাধিকবার মুদ্রিত।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ২০২৫ সালের শুরুতে প্রায় ৩৫ কোটি বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১১ কোটি বইয়ে সমস্যা ধরা পড়েছে, যা মোট বইয়ের ৩৩ শতাংশের মতো।
প্রতিটি শিক্ষাবর্ষের শুরুতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ একটি মহৎ উদ্যোগ হলেও, বইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তার প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের শেখার উপর। তাই শুধুমাত্র বই বিতরণ নয়, এর মান নিশ্চিত করাও জরুরি দায়িত্ব।

