ভ্যাটিকান বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের জন্য অবাধ, সুষ্ঠু, ন্যায়সঙ্গত ও স্বচ্ছ নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দল, সরকারব্যবস্থা বা ব্যক্তিকে সমর্থন করে না এবং কোনো নির্দিষ্ট ফলাফল কামনা করে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় ভ্যাটিকান দূতাবাসে পোপ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ কেভিন এস. র্যান্ডেল এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে আন্তঃধর্মীয় সংলাপের জন্য ডিকাস্ট্রির প্রধান কার্ডিনাল জর্জ জ্যাকব কুভকাডও উপস্থিত ছিলেন।
আর্চবিশপ র্যান্ডেল বলেন, “বাংলাদেশ যখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, হলি সি আপনাদের পাশে রয়েছে এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, ন্যায়সঙ্গত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া কামনা করে। প্রায় পাঁচ লাখ খ্রিষ্টান নাগরিকও অন্যান্য নাগরিকদের মতোই বিবেক অনুযায়ী ভোট দেবেন।”
আন্তঃধর্মীয় সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ আশা জাগায় এবং চরমপন্থা, ঘৃণা ও সংঘাতপূর্ণ পৃথিবীতে শান্তি, সংহতি, নিরাময় ও ন্যায়বিচারের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করে। আমাদের অবশ্যই সেতুবন্ধন তৈরি করার, ভালো সমরীয় হতে, অন্যদের প্রয়োজনে তাদের কাছে পৌঁছানোর সাহস থাকতে হবে। আমাদের এমন সমাজ দরকার নেই যেখানে ভয় ও ঘৃণা ভরা।”
ভ্যাটিকান দূত রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুতি প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি স্মরণ করেন ২০১৭ সালে পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফরের কথা, যখন তিনি বাস্তুচ্যুত সম্প্রদায়ের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। আর্চবিশপ র্যান্ডেল বলেন, “রোহিঙ্গারা মর্যাদা ও বাসস্থানের অধিকারী। তাদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি. আর. আবরার বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে ভ্যাটিকানের সম্পর্ক শান্তি, সহানুভূতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক আমাদের ধর্মীয় সম্প্রীতি, আন্তঃধর্মীয় সংলাপ এবং মানবিক মর্যাদা উন্নয়নের প্রতি অভিন্ন প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।”
তিনি আরও বলেন, “চলুন আমরা সম্মিলিতভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই শান্তির সেতুবন্ধন তৈরি করতে, ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখতে এবং বিশ্বাস, জাতি বা পটভূমি নির্বিশেষে কেউ যাতে পিছিয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে। আমাদের সাধারণ মানবতা যেন সমস্ত ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে আসে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা হাতে হাত মিলিয়ে কাজ চালিয়ে যাই।”