Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Thu, May 22, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • খেলা
    • প্রযুক্তি
    • বিনোদন
    • মতামত
    • সাহিত্য
    • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি
    মতামত

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    এফ. আর. ইমরানApril 22, 2025Updated:May 4, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    বরিশাল শহর
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    “বরিশাল বিভাগ” বাংলাদেশের দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশাসনিক বিভাগ। ‘প্রাচ্যের ভেনিস’ নামে খ্যাত বরিশাল আজ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম পশ্চাৎপদ অঞ্চল। দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক উপেক্ষা, দুর্বল অবকাঠামো, শিল্পায়নের অভাব, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের দুরবস্থা, পরিবেশগত ঝুঁকি এবং পর্যটন খাতে অগ্রগতির অভাবে এই অঞ্চলটি সম্ভাবনাময় হয়েও পিছিয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে প্রয়োজন সুসমন্বিত, টেকসই এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছাসম্পন্ন পরিকল্পনা।

    বরিশালের প্রধান সমস্যা-

    স্বাস্থ্য খাতে ভয়াবহ অবকাঠামোগত দুর্বলতা:

    বরিশাল বিভাগে প্রায় ২ কোটি মানুষের বসবাস হলেও এই জনসংখ্যার জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কোনো হাসপাতাল এখনো নির্মিত হয়নি। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকাভিত্তিক সেবা দিলেও তা আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম, প্রশিক্ষিত ডাক্তার এবং জরুরি সেবার চাহিদা পূরণে যথেষ্ট নয়। চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল প্রকল্পে বরিশালের নাম অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। রোগীরা চিকিৎসার জন্য ঢাকার দিকে ছুটছে- যা সময় ও অর্থ-উভয় দিক থেকেই তাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। গ্রামীণ এলাকায় হাসপাতাল, ক্লিনিক, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও অ্যাম্বুলেন্স সেবার অভাব পরিস্থিতিকে আরও করুণ করে তুলেছে।

    যোগাযোগ ব্যবস্থার মারাত্মক দুর্বলতা:

    পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বরিশাল ঢাকার সঙ্গে যুক্ত হলেও বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, এখনও এই অঞ্চলের রাস্তা-ঘাট উন্নত হয়নি। ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের বরিশাল অংশ এখনো ২৪ ফুট চওড়া, যা যানজট এবং দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। বরিশাল-ভোলা সেতু নির্মাণ বহুবার প্রতিশ্রুতি পেলেও এখনো দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। শহরের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে খানাখন্দ এবং আলোবাতির অভাবে সন্ধ্যার পর চলাচল বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। গ্রামীণ এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটাই দুর্বল যে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সময়মতো বাজারে পৌঁছাতে পারেন না। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হয়।

    শিল্পের চরম অভাব এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতা:

    বরিশাল এখনও কৃষি ও মৎস্যনির্ভর অর্থনীতিতে আবদ্ধ। ভোলার গ্যাসসম্পদ বরিশালের পাশেই থাকলেও এখানকার শিল্পে গ্যাস সংযোগ নেই- যা শিল্প বিকাশে বড় বাধা।

    অপসোনিন ফার্মা এবং খান সন্স সিমেন্ট মিলের মতো কয়েকটি কারখানা ছাড়া এখানে কোনো বৃহৎ শিল্প গড়ে ওঠেনি। এর ফলে তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। শিক্ষিত যুবকরা বাধ্য হয়ে ঢাকাসহ অন্য শহরে কাজ খুঁজছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘SEZ’ (Special Economic Zone) গড়ে তুললে বরিশালের কৃষি-প্রক্রিয়াজাত পণ্য, মৎস্যজাত পণ্য এবং ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রিক শিল্প গড়ে উঠতে পারত। কিন্তু এসব উদ্যোগের বেশিরভাগই এখনও পরিকল্পনার স্তরে আটকে আছে।

    দারিদ্র্য ও শিক্ষায় পশ্চাৎপদতা:

    ২০২২ সালের এইচআইইএস জরিপ অনুযায়ী, বরিশালের দারিদ্র্যের হার ২৬.৬%- যা দেশের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ। এই অঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও মানসম্পন্ন শিক্ষক, পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ ও প্রযুক্তি-সহায়ক শিক্ষা উপকরণ নেই। অনেক শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিকের আগেই ঝরে পড়ে, যার ফলে তারা দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হতে পারে না। কারিগরি ও পেশাগত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অভাব থাকায় কর্মসংস্থানে যোগ্যতা অর্জনেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বরিশালে আধুনিক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন জরুরি।

    পর্যটন খাতে অপ্রতুল উদ্যোগ ও অবহেলা:

    বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাতগুলোর একটি হলো পর্যটন। এখানে রয়েছে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত, চর কুকরিমুকরি, ফাতরার চর, গুপ্তখালী, বরগুনার ইকোপার্ক ও ভোলার প্রাকৃতিক নিদর্শন। কিন্তু পর্যাপ্ত অবকাঠামো, আবাসন, যাতায়াত এবং প্রচারণার অভাবে এই পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটক আকর্ষণে ব্যর্থ হচ্ছে। কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পসহ অন্যান্য উন্নয়ন পরিকল্পনা বছরের পর বছর ধরে থেমে আছে। ফলে স্থানীয় মানুষরা পর্যটন খাত থেকে প্রত্যাশিত আয় পাচ্ছে না এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও সীমিত।

    প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণে প্রশাসনিক উদাসীনতা:

    কুয়াকাটার ঐতিহাসিক ‘সোনার নৌকা’ একটি জাতীয় সম্পদ হলেও এটি সংরক্ষণে কোনো আধুনিক জাদুঘর বা গবেষণা কেন্দ্র নেই। প্রত্নসম্পদসমূহ সময়ের সঙ্গে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে, যা দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অপূরণীয় ক্ষতি। প্রত্নসম্পদের সংরক্ষণ, প্রচার এবং পর্যটনে রূপান্তরের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান ও সচেতনতা বৃদ্ধি সম্ভব।

    জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থার ঘাটতি:

    বরিশাল নিয়মিত ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, নদীভাঙন এবং লবণাক্ততার মুখোমুখি হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষি জমি ধ্বংস হচ্ছে এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা সীমিত, নদীভাঙন রোধে নেই পর্যাপ্ত বাঁধ। আধুনিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আগাম সতর্কতা এবং উপকূলীয় অবকাঠামো নির্মাণ না হলে ভবিষ্যতে এই অঞ্চল আরও ঝুঁকিতে পড়বে।

    প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অবহেলা:

    বরিশালবাসীর অভিযোগ, তাদের চাহিদা ও সমস্যা জাতীয় পর্যায়ের পরিকল্পনায় গুরুত্ব পায় না। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব, প্রশাসনের উদাসীনতা এবং উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গড়িমসির কারণে জনগণের আস্থাহীনতা বাড়ছে। পদ্মা সেতু ও পায়রা বন্দরের মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও নগর ও গ্রামীণ উন্নয়ন কার্যক্রম কাঙ্ক্ষিত গতি পায়নি। বরিশালের উন্নয়নে কার্যকর প্রশাসনিক উদ্যোগ ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব স্পষ্ট।

    সমাধানের পথ-

    • শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করা: বরিশালে দ্রুত গ্যাস সংযোগ প্রদান, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখা এবং সরকারি-বেসরকারি শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি। SEZ বাস্তবায়ন করতে হবে।
    • যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ: ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করা, বরিশাল-ভোলা সেতু নির্মাণ শুরু এবং গ্রামীণ রাস্তার মানোন্নয়ন জরুরি।
    • মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা: বিশেষায়িত হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং টেলিমেডিসিন সেবা চালু করতে হবে। বরিশালকে স্বাস্থ্য সেবায় ‘হাব’ হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে।
    • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া: ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
    • পর্যটনের টেকসই উন্নয়ন: পর্যটন এলাকা ভিত্তিক মাস্টারপ্ল্যান, অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রচারণা চালানো জরুরি। বেসরকারি বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে হবে।
    • প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণের জন্য জাদুঘর ও গবেষণা কেন্দ্র: ঐতিহ্য রক্ষায় সঠিক সংরক্ষণ, ডকুমেন্টেশন ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক।
    • জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো গড়ে তোলা: বাঁধ, আশ্রয়কেন্দ্র ও দুর্যোগ-পূর্ব প্রস্তুতি কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে হবে।
    • প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিশ্চিত করা: বরিশালকে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

    নিষ্কর্ষ-

    বরিশাল শুধু একটি অঞ্চল নয়, এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রতীক। এই অঞ্চল যদি পিছিয়ে পড়ে- তবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কখনোই পূর্ণতা পাবে না। তাই এখনই সময় বরিশালের বঞ্চনা দূর করে তাকে সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার। সুপরিকল্পিত উদ্যোগ, জবাবদিহিমূলক প্রশাসন এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করে বরিশালকে আবারো ‘প্রাচ্যের ভেনিস’-এ পরিণত করা সম্ভব।

    • প্রতিবেদক– এফ.আর. ইমরান; সাংবাদিক- ‘সিটিজেনস ভয়েস’
    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    অর্থনীতি

    এনবিআর দুই ভাগ করার কারণ কী, কেন উঠেছে এই বিতর্ক?

    May 22, 2025
    বাংলাদেশ

    একাধিক অধ্যাদেশের খসড়ায় যে সংকেত দিল উপদেষ্টা পরিষদ

    May 22, 2025
    বাংলাদেশ

    অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আওয়ামী পন্থীদের দমনে উদ্বেগ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

    May 22, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025

    ২০২৬ সালে সোনার দাম ছাড়াবে ৪০০০ ডলার: জেপি মরগান

    অর্থনীতি April 23, 2025

    তরুণরাই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের অগ্রদূত

    মতামত February 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2024 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.