জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক শামীমা সুলতানা ওরফে মায়া পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জলিল বিশ্বাস মার্কেটের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সামনে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
শামীমা সুলতানা বলেন, গত আগস্টে তিনি দলীয় প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগের কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তার চিঠিতে উল্লেখ ছিল, ‘আমি কাউকে আঘাত করতে চাই না বা সরাসরি অভিযোগ তুলতে চাই না। তবে সত্য হলো আমি আমার বিবেক, সততা এবং নীতিকে কোনোভাবেই বিসর্জন দিতে চাই না।’
তিনি অভিযোগ করেন, এনসিপিতে তার নামে বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হয়েছে। বিশেষ করে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির শপথ গ্রহণের দিন তার তোলা ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে তাকে ‘আওয়ামী দোসর’ বলা হয়েছে।
শামীমা বলেন, ‘আমি আগে কখনো কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। তবে দলীয়ভাবে কোনো সমর্থন পাইনি। সামাজিক ও ব্যবসায়িকভাবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।’
শামীমা আরও অভিযোগ করেন, জেলা ও উপজেলা কমিটি মহানগর কমিটির নিয়ন্ত্রণে থাকায় তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করতে পারছেন না।
চিঠিতে উল্লেখ ছিল, ‘রাজশাহীতে এক পক্ষ এনসিপিকে পক্ষভূত করার চেষ্টা করছে এবং সব ক্ষেত্রে আমাদের কাজ করতে বাধা দিচ্ছে, ব্যক্তিগতভাবে অপমান করছে।’
শামীমা বলেন, এক মাস পরেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। পদত্যাগের ঘোষণায় তিনি উল্লেখ করেন, ‘মিথ্যা অভিযোগ ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার কারণে আমার নৈতিক অবস্থান অটুট রাখা আর সম্ভব হচ্ছে না। সামাজিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি আমার ব্যক্তিগত আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে উঠেছে।’
উল্লেখ্য, ১৮ জুন এনসিপির জেলা ও মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ২৫ জুন জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী নাহিদুল ইসলাম আরেক যুগ্ম সমন্বয়কারী ফিরোজ আলমকে লাথি মারার অভিযোগে প্রতিক্রিয়া দেখান। পরের দিন জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলাম পদত্যাগ করেন।
নাহিদুল ইসলাম শামীমার পদত্যাগ বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা গেলেও ধরেননি। মহানগর কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলী জেলা কমিটি নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘মায়া, ফিরোজ আলম ও সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামীসম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। আমরা তাদের সরাতে না পারলে জেলা ও মহানগরের অন্যরা একযোগে পদত্যাগ করতেন। মায়া আগাম পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।’