চুয়াডাঙ্গায় ৪০ জন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের জন্য দুই দিনের মানসিক সহায়তা ও আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুব দক্ষতা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের অর্থায়নে এই উদ্যোগ নিয়েছে আইডেন্টিটি ইনক্লুশান।
গত ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণকে লক্ষ্য করে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গায় আত্মহত্যার হার বাড়ছে এবং জেলায় কোনো মানসিক চিকিৎসক নেই। এজন্য যুব দক্ষতা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য আইডেন্টিটি ইনক্লুশানের সহায়তা চেয়েছে।
প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা, যাতে তারা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য চাহিদা চিহ্নিত করতে, সহায়তা প্রদান করতে এবং আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকা শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে পারেন। এছাড়া বিদ্যালয়ে একটি নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।
আইডেন্টিটি ইনক্লুশানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শমসিন আহমেদ বলেন, “শিক্ষকরাই প্রায়ই প্রথম লক্ষ্য করেন যখন কোনো শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভুগছে। সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে তারা শিক্ষার্থীর জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হবেন। এই প্রশিক্ষণ শিক্ষকদের আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা বাড়াবে।”
প্রশিক্ষণে মানসিক স্বাস্থ্যের মৌলিক ধারণা, প্রাথমিক মানসিক সহায়তা, সক্রিয় শ্রবণ ও বিচারহীন যোগাযোগ, আত্মহত্যার ঝুঁকির প্রাথমিক সতর্ক সংকেত চিহ্নিতকরণ এবং জরুরি সাড়া ও রেফারেল প্রটোকল অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, প্রতিবছর প্রায় ৮ লাখ মানুষ আত্মহত্যায় প্রাণ হারান। ১৫–২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যা মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৬ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেন, যাদের অনেকে ২৫ বছরের নিচে। তবে সচেতনতা, সামাজিক সমর্থন ও বিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার সীমিত সুযোগের অভাবে সমস্যা বাড়ছে।
জেলা স্থানীয় সরকার এই উদ্যোগকে সমর্থন করেছে। যুব দক্ষতা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সভাপতি আল রোমাজ রাজন বলেন, “শিক্ষকদের মানসিক সহায়তা প্রদানের দক্ষতায় বিনিয়োগ মানে শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যতে বিনিয়োগ।”
এই প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা অন্তর্ভুক্ত করার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে নিজের মূল্য উপলব্ধি করে এবং কেউ অবহেলিত না হয়।