প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই বিতরণে বারবার দেরির ইতিহাস এবারও পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা তৈরি করেছে। চলতি বছরের শিক্ষাবর্ষে বই ছাপাতে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রায় তিন মাস শিক্ষাজীবনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এবারও মাধ্যমিক স্তরের বই নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে, নবম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য মুদ্রণকারীদের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হলেও ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশ এখনো দেওয়া হয়নি। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি মাত্র ৫০ দিনের মধ্যে কার্যাদেশ দেওয়া হবে কি না, বই ছাপা শুরু হবে কবে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছাবে কখন—এগুলো স্পষ্ট নয়।
নভেম্বর–ডিসেম্বর মাসে মুদ্রণকারীরা সাধারণত গাইড বই ছাপার কাজে ব্যস্ত থাকেন। এছাড়া ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পোস্টার ও লিফলেট প্রিন্টিংও বৃদ্ধি পাবে। এই পরিস্থিতিতে মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীর হাতে সময়মতো বই পৌঁছানো চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।
করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যেই শিখনঘাটতিতে ভুগছেন। তার ওপর আবার পাঠ্যবই ছাপাতে দেরি হলে শিক্ষাজীবনের ক্ষতি আরো বৃদ্ধি পাবে। যদিও এনসিটিবি আগভাগেই দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করেছিল এবং মূল্যায়নের কাজও সম্পন্ন হয়েছিল, সেপ্টেম্বর মাসে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির দরপত্র বাতিল করা হয়। নতুন দরপত্র আহ্বান করা হলেও বই ছাপার কার্যাদেশ এখনও মঞ্জুর হয়নি।
দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি সম্পন্ন হলে ৪৫ দিনের মধ্যে বই ছাপা ও সরবরাহের কথা থাকলেও এনসিটিবি কর্মকর্তারা সময়মতো বই বিতরণ নিশ্চিত করতে শঙ্কায় রয়েছেন। বছরের শুরুতেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়া সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায়িত্ব। তাই এই দায়িত্ব পালনে ঘাটতি থাকায় বারবার সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এনসিটিবিকে শুধু কার্যাদেশ দেয়া নয়, বই ছাপার প্রতিটি ধাপ নিয়মিত তদারকি করতে হবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যাহত না হওয়ার জন্য এবং বারবার দেরি এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জোরালো উদ্যোগ জরুরি।

