জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আজ বৃহস্পতিবার রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
এই রায়কে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আজ ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ফলে রাজধানীজুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, যেকোনো ধরনের সহিংসতা বা নাশকতা প্রতিরোধে প্রস্তুত রয়েছে তারা।
সকালে হাইকোর্ট মাজারসংলগ্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফটকে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-এর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। এলাকাজুড়ে বিজিবি ও ডিএমপির সাঁজোয়া যান মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল ৮টার পর সেখানে আসে সেনাবাহিনীর টহল দল, যারা অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, আজ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ডিএমপির ১৭ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটও সমন্বিতভাবে কাজ করছে। গোটা শহরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার থেকেই ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এসব চেকপোস্টে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহন তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ সকালেও এসব কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। গত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, গেস্ট হাউস ও মেসে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে।
আজ সকালে ঢাকার সড়ক পরিস্থিতি ছিল তুলনামূলক স্বাভাবিক। সকাল ৭টার পর মিরপুর থেকে হাইকোর্ট এলাকায় আসার পথে বিভিন্ন মোড়ে পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। যান চলাচল অব্যাহত থাকলেও সংখ্যায় ছিল কিছুটা কম। বাংলামোটর, শাহবাগ ও হাইকোর্ট এলাকায় যৌথ বাহিনীর টহল দেখা গেছে।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় থেকে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। শাহবাগ থেকে সে পথে প্রবেশ করতে চাওয়া যানবাহনগুলোকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ট্রাইব্যুনাল এলাকার প্রতিটি প্রবেশপথে অবস্থান নিয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রায়ের দিনটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় যৌথ বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

