প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু হবে। সংসদের প্রথম ১৮০ দিনে সংবিধান সংশোধন এবং পরবর্তী ৩০ দিনে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ তথ্য জানান।
ড. ইউনূস বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। তিনি জানান, ‘আমরা সব বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জাতীয় নির্বাচনের মতোই গণভোটও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে হবে। এতে সংবিধান সংস্কারের কোনো বাধা তৈরি হবে না। নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে।’
তিনি আরও জানান, গত ৯ মাস ধরে রাষ্ট্র গঠনের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে। সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ ৩০টি বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য এটি আশাব্যাঞ্জক। তাই কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন ড. ইউনূস।
ড. ইউনূস গণভোটের ব্যালেটে প্রদর্শিত প্রশ্নও প্রকাশ করেন। প্রশ্নটি হলো: “আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?”
প্রস্তাবগুলো হলো:
১. নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
২. আগামী সংসদ দুই কক্ষ বিশিষ্ট হবে। জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চকক্ষ গঠিত হবে। সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
৩. সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দলের ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকারসহ ৩০টি প্রস্তাবের বাস্তবায়ন আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলোকে বাধ্য করবে।
৪. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন হবে। গণভোটের দিনে এই চারটি বিষয়ে একটিমাত্র প্রশ্নে ভোটাররা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দেবেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ আদেশে স্বাক্ষর করেন।

