ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদন—
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে নতুন করে ১ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। এর ফলে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৮ জনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নতুন আগত রোহিঙ্গার সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫১। অর্থাৎ এক মাসে নতুনভাবে ২ হাজার ৯৮৯ জন রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হয়েছে। ২০২৪ সাল থেকে রাখাইন রাজ্যে সংঘাত ও নির্যাতনের কারণে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে নিরাপত্তা খুঁজছে।
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, নতুন আগতদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ নারী ও শিশু, ১২ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৫২ শতাংশ নারী এবং ৪৮ শতাংশ পুরুষ।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা শুরু করলে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে ১৯৯০-এর দশক থেকে মিয়ানমার সরকারের নির্যাতন এড়াতে তিন লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘর্ষের তীব্রতার কারণে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে গড়ে ছয় হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের সরকারি আট হাজার একর বনভূমিজুড়ে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে। সেখানে বর্তমানে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৯১টি পরিবারের মধ্যে মোট ১১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৬ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। প্রতি বছর ক্যাম্পগুলোয় কমপক্ষে ৩০ হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে, যা দৈনিক গড়ে ৮২টি শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার সমতুল্য।
অব্যাহত অনুপ্রবেশের কারণে কক্সবাজারে স্থান সংকুলান, পরিবেশের অবনতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, রোহিঙ্গা সহায়তা হ্রাস বা বন্ধ হলে কক্সবাজারের বহুমুখী সমস্যা আরো গভীর হবে।

