পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের ২৮ বছর পরও বাঙালি ও উপজাতি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বৈষম্য কমেনি বরং আরো বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। চুক্তি বাস্তবায়নের পরিধি বাড়ার সঙ্গে নিরাপত্তাহীনতাও বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি করে সংগঠনটি ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ অবিলম্বে বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব মো. আলমগীর কবির।
আলোচনা সভায় তিনি বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নের দীর্ঘ সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র, হত্যা, গুম, অপহরণ ও চাঁদাবাজির ঘটনা থামেনি।
তাঁর দাবি অনুযায়ী, উপজাতিদের ছয়টি সশস্ত্র সংগঠন নিয়মিত এসব অপরাধে সক্রিয় এবং বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজি করছে। বিভিন্ন সময়ে কয়েক হাজার বাঙালি নিহত হয়েছেন এবং সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসারের সদস্যরাও প্রাণ হারিয়েছেন।
মহাসচিব বলেন, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পার্বত্য এলাকায় কোনো অবৈধ অস্ত্র থাকার কথা নয়, কিন্তু ২৮ বছরে অস্ত্রসংখ্যা বরং বেড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলকে উপজাতি-উদ্দেশিত অঞ্চল ঘোষণা করে সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, চুক্তির অংশ হিসেবে ২৩৯টি সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছিল। চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫টি বাস্তবায়িত হয়েছে, ৩টি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় এবং ৪টি আংশিক বাস্তবায়িত। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা দুর্বল হয়ে পড়ায় প্রত্যাহার করা সেনা ক্যাম্পগুলো পুনঃস্থাপনের দাবি জানাচ্ছে পরিষদ।
পার্বত্য অঞ্চলের সার্বিক নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় সড়ক নির্মাণ, সেনা ও বিজিবি ক্যাম্প বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা জরুরি। তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরা হয় যে, নিরাপত্তা জোরদার করতে চুক্তি পুনর্বিবেচনা ও বাতিল এখন সময়ের দাবি।
আলোচনা সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের আরো কয়েকজন নেতা বক্তব্য রাখেন।

