ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মান ও ব্যবস্থাপনা পরিদর্শনের সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তীব্র বাকবিতণ্ডায় জড়ান জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ডা. ধনদেব চন্দ্র বর্মন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) মহাপরিচালক ডা. মো. আবু জাফর হাসপাতাল ঘুরে দেখার সময় এই ঘটনার সূচনা হয়। মুহূর্তেই ঘটনাটির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ডা. ধনদেবকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডা. ধনদেব চন্দ্র বর্মন। তিনি বলেন, মহাপরিচালকের কাছ থেকে তিনি একজন অভিভাবকের মতো আচরণ আশা করেছিলেন। তার ভাষায়, ‘ডিজি এসে হাসপাতালে কী সমস্যা আছে, তা না জেনে প্রথমেই জানতে চান ভেতরে কেন টেবিল রাখা হয়েছে। বিষয়টি আমাকে অপমানিত করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার অনেক বন্ধুই ইতোমধ্যে অধ্যাপক হয়েছেন। আমার চাকরিজীবন প্রায় শেষ। কিন্তু নানা কারণে আমি তা পারিনি। এখন যদি সাসপেনশনও হয়, তাতে আমার আপত্তি নেই।’
কেন পদোন্নতি আটকে ছিল
ডা. ধনদেব ২০১৩ সালে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু মাত্র চার মাস আগে তিনি সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। দীর্ঘ সময় পদোন্নতি না পাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে উঠে আসে একাধিক তথ্য।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, গত ১৭ বছরে তিনি পদোন্নতির নিয়মিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেননি। ময়মনসিংহ শহরে অবস্থান করে বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন করার সুবিধা বজায় রাখতেই তিনি আগে পদোন্নতির আবেদন করেননি। পদোন্নতির অন্যতম শর্ত বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন জমা দেওয়া। এখানেও ছিল তার অবহেলা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ডা. ধনদেব ফাউন্ডেশন ট্রেনিং করেননি। ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষায়ও অংশ নেননি বা উত্তীর্ণ হননি। সিনিয়র স্কেল পরীক্ষাও দেননি। পদোন্নতির প্রয়োজনীয় মানদণ্ডগুলো তিনি পূরণ করেননি। তাই আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি পদোন্নতি পাননি।
তিনি আরও জানান, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার তাকে ইনসিটু পদোন্নতির সুযোগ দিয়েছে। চলতি বছরের ২৯ জুলাই তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন।

