বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতার উসকানিমূলক কনটেন্ট বন্ধ করতে মেটাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। শুক্রবার ই-মেইলের মাধ্যমে মেটার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ফেসবুকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ইতোমধ্যেই জনজীবনে ভয় ও সহিংসতা ছড়িয়েছে। গত গণ-অভ্যুত্থানে ১,৪০০ শিক্ষার্থী নিহত এবং আরও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ অত্যন্ত সংবেদনশীল অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার নাজুক পরিস্থিতি সামলে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিটিআরসির চিঠিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন এবং নির্বাচনের ফলাফল ব্যাহত করার উসকানিমূলক পোস্টের মাধ্যমে জনজীবনে হুমকি সৃষ্টি হচ্ছে। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। কিছু ব্যক্তি মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আড়ালে সহিংসতা উসকানি দিচ্ছে। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে সহিংসতা ছড়ানোর প্রচেষ্টা দেখা গেছে। এর প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে দ্য ডেইলি স্টার ও দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলে।
বিটিআরসি অভিযোগ করছে, মেটা উসকানিমূলক কনটেন্ট সরানো বা ব্লক করতে যথেষ্ট দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে এসব অ্যাকাউন্ট থেকে আরও সহিংসতা ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও মেটা কার্যকর কোনো সাড়া দেয়নি।
চিঠিতে কয়েকটি স্পষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
-
বাংলাদেশ-সংক্রান্ত কনটেন্টে কমিউনিটি গাইডলাইন আরও কঠোর ও দ্রুত প্রয়োগ করা।
-
বাংলা ভাষার কনটেন্টে নজরদারি জোরদার করা।
-
অভিযোগ উঠা কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।
বিটিআরসি আশা করছে, মেটা এই আহ্বান গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, যাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংসতা ও উসকানিমূলক কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায়।

