একীভূত হতে যাওয়া পাঁচটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারমূল্য একযোগে ‘শূন্য’ হিসেবে ঘোষণা করা হলে তা কঠোর ও একতরফা সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। সংগঠনটি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষায় তিনটি প্রস্তাব দিয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ প্রস্তাব জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তে একীভূত হতে যাওয়া পাঁচটি ইসলামী ব্যাংকের সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারমূল্য ‘শূন্য’ হিসেবে গণ্য করার ঘোষণা এসেছে। এ ঘোষণায় শেয়ারহোল্ডাররা গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
বিএমবিএ জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা ও কর্তৃত্বকে শ্রদ্ধা জানায়। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৈধ ও নিয়মমাফিক মূলধন একযোগে ‘শূন্য’ হিসেবে ঘোষণা করা একটি কঠোর ও একতরফা সিদ্ধান্ত।
সংগঠনটি জানায়, অনেক শেয়ারহোল্ডার দীর্ঘদিন ধরে দেশের ব্যাংকিং খাতে আস্থা রেখে নিয়মিত বিনিয়োগ করেছেন এবং সকল বিধি-বিধান মেনে চলেছেন। যথাযথ মূল্যায়ন, স্বতন্ত্র নিরীক্ষা এবং কোম্পানি আইন ১৯৯৪ অনুযায়ী শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন করতে পারে।
বিএমবিএ মনে করে, এই সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা যুক্তিসংগত নয়।
সংগঠনটি সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ বিবেচনায় তিনটি প্রস্তাব দিয়েছে:
১. শেয়ারমূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়নের জন্য স্বতন্ত্র ও যুক্তিসংগত মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা।
২. চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে শেয়ারহোল্ডারদের মতামত ও ব্যাখ্যা উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া।
৩. একীভূতকরণ বা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ বা সমন্বিত সমাধান কাঠামো বিবেচনা করা।
বিএমবিএ আশা করছে, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বিষয়টি মানবিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার আলোকে পুনর্বিবেচনা করবেন। দেশের ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বিনিয়োগকারীদের ন্যায্য অধিকারও সমানভাবে রক্ষা করা সম্ভব।

