বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এখন থেকে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণের ২০ শতাংশ খেলাপি হলেও তারা ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল পরিচালনায় যোগ্য হবে। এর আগে, খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের বেশি হলে প্রতিষ্ঠান অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হতো।
গতকাল বুধবার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। পুনঃঅর্থায়ন এবং প্রাক-অর্থায়ন স্কিমে অংশ নিতে প্রযোজ্য শ্রেণিবিন্যাসিত ঋণ ও বিনিয়োগের সর্বোচ্চ হার এখন ২০% নির্ধারণ করা হয়েছে। পূর্বের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।
একই সঙ্গে সরকারের অগ্রাধিকার খাত হিসেবে উদ্যোক্তাদের চাহিদা পূরণের জন্য স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ৩ বছর মেয়াদি ২৫ হাজার কোটি টাকার স্কিম চলমান থাকবে। এই তহবিল ২০২২ সালের জুলাইতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে গঠিত হয় এবং এর নাম রাখা হয় ‘সিএমএসএমই খাতে মেয়াদি ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই তহবিল থেকে ২ শতাংশ সুদে অর্থ নিয়ে উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করবে। গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সুদের হার ৭ শতাংশ। প্রাথমিকভাবে স্কিমের মেয়াদ ৩ বছর, আর গ্রাহক পর্যায়ে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ৫ বছর। প্রয়োজনে তহবিলের পরিমাণ বাড়ানো হবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, নারী উদ্যোক্তা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন উদ্যোক্তা এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিতরণ করা মোট ঋণের ন্যূনতম ৭০ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে এবং সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ব্যবসায় খাতে হবে। এর মধ্যে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে এবং সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করতে হবে।
আগের নিয়মে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই তহবিল নিতে চাইলে তাদের শ্রেণীকৃত ঋণ/বিনিয়োগের হার ১০ শতাংশের কম হতে হবে এবং ন্যূনতম ৩ বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। নতুন নির্দেশনায় খেলাপি ঋণের সীমা ২০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
গত বছর আগস্টে সরকারের পরিবর্তনের পর গোপন রাখা বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশ পেতে শুরু করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে দেখা যায়, মাত্র এক বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়েছে, আর বেসরকারি খাতেও তা ১০ শতাংশের বেশি।

