ব্যাংক খাতে পরিবারতন্ত্র কমাতে উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য সংশোধন করা হচ্ছে ব্যাংক কোম্পানি আইন। নতুন খসড়ায় পরিবারের সংজ্ঞা আরও বিস্তৃত করার প্রস্তাব এসেছে। একই সঙ্গে একজন পরিচালক কত বছর টানা দায়িত্বে থাকতে পারবেন এবং একই পরিবার থেকে কতজন পরিচালক বসতে পারবেন—তা কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া তৈরি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, পরিবারের বিস্তৃত সংজ্ঞা ও পরিচালকদের দায়িত্বে থাকার সময়সীমা কমানো হলে কোনো ব্যাংক আর একটি পরিবারের নিয়ন্ত্রণে আটকে থাকবে না। এতে অনিয়ম ও দুর্নীতি কমবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো, প্রিমিয়ার গ্রুপ ও সিকদার গ্রুপ নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে একাধিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব গ্রুপের পরিচালকেরা নিজেদের পাশাপাশি স্ত্রী বা স্বামী, ছেলে-মেয়ে, জামাতা ও নিকটাত্মীয়দের পর্ষদে বসাতেন।
ব্যাংক খাতে অব্যবস্থাপনা রোধে দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে—এমন মত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, “আমরা চাই আগামী মাসের মধ্যেই অধ্যাদেশটি পাস হোক। ব্যাংক খাত যেভাবে চলছিল, সেভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, কয়েকটি পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকা কিছু ব্যাংক এখন গুরুতর সংকটে পড়েছে। আমানতকারীরা তাদের জমা অর্থ ফেরত পাচ্ছেন না। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংক গঠন করছে। একীভূত ব্যাংকটিকে ২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন দিতে হচ্ছে সরকারের কোষাগার থেকে। এই অর্থ সাধারণ মানুষের করের টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, নতুন আইন সংশোধনের মূল লক্ষ্য হলো ব্যাংক খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনা, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা এবং ব্যাংক ব্যবসা পরিচালনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্ণ এখতিয়ার নিশ্চিত করা। এখন ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়াটি পর্যালোচনা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তবে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) খসড়ার বিভিন্ন ধারায় তাদের মতামত দিয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গত বৃহস্পতিবার বলেন, “খসড়াটি আমি পুরোপুরি দেখিনি। যতটুকু জানি ব্যাংক খাতের ভালোর জন্যই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে।”
পরিবারতন্ত্রে লাগাম:
ব্যাংক খাতে পরিবারতন্ত্র দীর্ঘদিনের সমস্যা। দেশে এখন সরকারি ও বেসরকারি মিলে মোট ৬১টি ব্যাংক রয়েছে, যার মধ্যে ৫টি একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায়। এসব ব্যাংক পরিচালিত হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে এবং ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী। ব্যাংকগুলো সাধারণ মানুষের আমানত গ্রহণ করে। তাই মানুষের টাকা নিরাপদ রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নজরদারি করে।
এই পরিবারতন্ত্র কমাতে আইনে বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব এসেছে। গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের একটি হলো ‘পরিবার’-এর সংজ্ঞা বিস্তৃত করা। এখন পর্যন্ত আইনে পরিবার বলতে বোঝানো হয় স্ত্রী বা স্বামী, পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন ও নির্ভরশীল ব্যক্তি। নতুন খসড়ায় ভাবি, ভগ্নিপতি, শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালিকা, দেবর, ননদ এবং নির্ভরশীল ব্যক্তিকে যুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে।
তবে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) পরিবারকে শুধু স্বামী-স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের মধ্যে সীমিত রাখতে চায়। তারা উদাহরণ দিয়েছে—ভারতে পরিবার বলতে স্বামী-স্ত্রী বা হিন্দু অবিভক্ত পরিবারকে বোঝানো হয়। পাকিস্তানে স্বামী-স্ত্রী, নির্ভরশীল সন্তান ও নির্ভরশীল ভাই-বোন। শ্রীলঙ্কায় পরিবার বলতে শুধু স্বামী-স্ত্রী বা নির্ভরশীল সন্তান।
ব্যাংকে একই পরিবার থেকে পরিচালকের সংখ্যা কমানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। এখন একটি পরিবার থেকে সর্বোচ্চ তিনজন পরিচালক থাকতে পারেন। প্রস্তাবিত খসড়ায় এ সংখ্যা দুইজন করার কথা বলা হয়েছে। তবে বিএবি এ সীমা শিথিল করার পক্ষে যুক্তি দিয়েছে। তাদের দাবি, সীমা শিথিল হলে ব্যাংকের প্রতি দায়িত্বশীল ও অঙ্গীকারপূর্ণ পরিচালক যুক্ত করা যাবে।
১৯৯৬ সালে অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বাধীন ব্যাংক সংস্কার কমিটি সুপারিশ করেছিল যে একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে পরিচালনা পর্ষদে রাখা উচিত নয়। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এখন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। পরিচালকের মেয়াদ নিয়েও আসছে পরিবর্তন। বর্তমানে একজন পরিচালক টানা ১২ বছর দায়িত্বে থাকতে পারেন। নতুন খসড়ায় সময়সীমা কমিয়ে ছয় বছর করার কথা বলা হয়েছে। বিএবি বলছে, অভিজ্ঞতা ধরে রাখতে অন্তত ৯ বছর থাকা উচিত। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা পরিবারের নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে এবং ব্যাংকগুলো দুর্দশায় পড়েছে।
২০১৮ সালের আগে পরিচালকের মেয়াদ ছিল ছয় বছর। ২০১৮ সালে তা বাড়িয়ে ৯ বছর করা হয়। ২০২৩ সালে আইন সংশোধন করে তা ১২ বছর করা হয়। ওই বছরের ৮ জুন ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) বিল-২০২৩ সংসদে তোলা হলে পরিচালক পদের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি হঠাৎই যুক্ত হয়। সংশোধনী আনেন সরকারি দলের এমপি আহসানুল ইসলাম। এটি পাস হওয়ায় সংসদে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ নামে পরিচিত জাতীয় পার্টির সদস্যরাও প্রতিবাদ করে ওয়াকআউট করেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল—পরিচালকেরাই ব্যাংক লুটপাটের মূল হোতা। ন্যাশনাল ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংকের উদাহরণ তুলে ধরেন তাঁরা।
২০২৩ সালে সরকারঘনিষ্ঠ ব্যাংক মালিকদের চাপেই পরিচালকদের ১২ বছর দায়িত্বে থাকার সুযোগ তৈরি হয়। এর নেপথ্যে ছিলেন বিএবির নেতা ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি এখন কারাগারে। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিদেশে। সাবেক গভর্নর ফজলে কবির দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তাধীন। আরেক সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার একটি হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি হয়ে আছেন। বর্তমানে একটি পরিবারের সদস্য ছাড়াও সেই পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট দুইটি প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধি পরিচালক পাঠাতে পারে। পরিবারতন্ত্র কমাতে নতুন খসড়ায় এ সংখ্যা কমিয়ে একজন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র পরিচালক ৫০% করার প্রস্তাব:
ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়ায় পরিচালনা পর্ষদের গঠনেও বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব এসেছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, একটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ হবে ১৫ সদস্যের এবং এর ৫০ শতাংশই থাকবেন স্বতন্ত্র পরিচালক। অর্থাৎ অন্তত ৮ জন স্বতন্ত্র পরিচালক রাখতে হবে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে ২০ সদস্যের পর্ষদ থাকে এবং মাত্র ৩ জন স্বতন্ত্র পরিচালক রাখার বিধান রয়েছে।
এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। তাদের যুক্তি, স্বতন্ত্র পরিচালক সংখ্যা সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩ জন হওয়াই যথেষ্ট। অর্ধেক স্বতন্ত্র পরিচালক রাখা হলে শেয়ারমালিকদের নিয়ন্ত্রণ কমে যাবে এবং ব্যাংক পরিচালনায় মুনাফা ও প্রবৃদ্ধির চেয়ে নীতিপালন বেশি গুরুত্ব পাবে। তবে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, “স্বতন্ত্র পরিচালক সংখ্যায় হবে ৮ জন। পর্ষদের শতভাগই স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিতে পারলে আরও ভালো হতো।”
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ রোধেও নতুন বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব এসেছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য বা স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা থাকতে পারবেন না। ব্যবস্থাপনা পর্যায়ের নিয়োগেও আসছে পরিবর্তন। বর্তমানে ব্যাংকের এমডি, সিইও বা পরিচালক নিয়োগ, পুনর্নিয়োগ, পদায়ন, অব্যাহতি, বরখাস্ত ও অপসারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন। তবে বিশেষায়িত ব্যাংক—যেমন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক বা রাকাব—এর ক্ষেত্রে এই অনুমোদন লাগে না। খসড়ায় বলা হয়েছে, এক নিয়ম বজায় রাখতে এসব ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হবে।
এছাড়া এমডি, সিইও বা পরিচালক হওয়ার জন্য বর্তমান ১০ বছরের অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে ১৫ বছর করার প্রস্তাব আনা হয়েছে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা সংক্রান্ত ধারা বাদ দেওয়ার প্রস্তাবও এসেছে খসড়ায়। গভর্নরের ব্যাখ্যা, “টাকা দিতে পারছে কি না, সেটাই আসল বিষয়। তাই ‘ইচ্ছাকৃত’ শব্দটি অপ্রয়োজনীয়।” পর্ষদ বাতিল সংক্রান্ত ধারাও সংশোধন করা হচ্ছে। আগে বাংলাদেশ ব্যাংক বাতিল আদেশের মেয়াদ সময় সময় বাড়াতে পারত, সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত। নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পর্ষদ বাতিলের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে সব ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ দেবে। নিয়োগপত্রে যে মেয়াদ থাকবে, আদেশটি ততদিন বহাল থাকবে।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আবারও বলেছেন, “আমরা চাই আগামী মাসের মধ্যেই অধ্যাদেশটি পাস হোক। ব্যাংক খাত যেভাবে চলছিল, সেভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা আরও জোরদার:
দেশের ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ এগোচ্ছে। সংশোধিত খসড়ায় আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বেশ কিছু কড়া ধারা যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমান আইনে আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে যুক্ত কোনো ব্যাংকের নতুন আমানত গ্রহণ বন্ধের বিধান রয়েছে। নতুন খসড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক চাইলে সেই ব্যাংকের ঋণ বিতরণ কার্যক্রমও স্থগিত করতে পারবে। আরও বলা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানেও নতুন ঋণ, বিনিয়োগ বা মূলধন প্রদান বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে। গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, “আমানতকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় নতুন ঋণও বন্ধ করা উচিত। তাই এই প্রস্তাব আনা হয়েছে।”
খসড়ায় আরও বড় পরিবর্তন এসেছে ব্যাংকের পরিচালনা-সংক্রান্ত বিধানে। ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো দেনাদার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদত্যাগ, বরখাস্ত, অপসারণ বা অব্যাহতি—কোনোটিই দিতে পারবে না। শেয়ার বিক্রয় বা হস্তান্তরও নিষিদ্ধ থাকবে।
ব্যাংকের তহবিলের অপব্যবহার, মানি লন্ডারিং বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের মতো গুরুতর অপরাধে বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসরি কোনো ব্যাংকের পুরো পর্ষদ বাতিল করতে পারবে। আগের নিয়মে দুই বছরের সর্বোচ্চ মেয়াদে পর্ষদ বাতিলের বিধান থাকলেও নতুন খসড়ায় সময়সীমা নমনীয় করা হয়েছে। পর্ষদ বাতিলের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনোনীত ব্যক্তিদের দিয়ে ব্যাংক পরিচালনার সব ক্ষমতা প্রয়োগ করা হবে। এই পর্ষদের মেয়াদ সর্বোচ্চ তিন বছর হতে পারবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক মেয়াদ বাড়াতে বা কমাতে পারবে।
ব্যাংক খাতে সুশাসন ফিরবে:
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী মনে করেন, নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, অতীতে ব্যাংক খাতে যেসব অনিয়ম–দুর্নীতি হয়েছে, তার অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাংকের পরিচালকেরা সরাসরি জড়িত ছিলেন। পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা বাড়লে এই অনিয়ম ও প্রভাব খাটানো কঠিন হবে। তবে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে দক্ষতা, গ্রহণযোগ্যতা ও বিচক্ষণতা অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পরিচালনা পর্ষদে কোনো পরিচালককে একটানা ছয় বছরের বেশি দায়িত্ব পালন করতে না দেওয়ার বিধান, একই পরিবারের দুজনের বেশি পরিচালক নিয়োগ না রাখা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালক ও এমডি নিয়োগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা—এসব প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য। মুস্তফা কে মুজেরী মনে করেন, পরিবারের সংজ্ঞা বিস্তৃত করলে ব্যাংক পরিচালনায় স্বচ্ছতা বাড়বে এবং অনিয়ম কমবে। তাঁর ভাষায়, “এতে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফিরবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

