বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে জামানতবিহীন ডিজিটাল ন্যানো লোন বা অতিক্ষুদ্র ঋণ নেওয়ার সুযোগ এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাণিজ্যিকভাবে সেবাটি চালুর মাত্র তিন বছরে গ্রাহকরা বিকাশ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত এই ঋণ সুবিধা নিয়েছেন ১৯ লাখের বেশি গ্রাহক। তাদের মধ্যে ২৫ শতাংশই নারী। মোট লেনদেনের সংখ্যা ১ কোটি ২৭ লাখের বেশি। অর্থাৎ, অধিকাংশ গ্রাহক একাধিকবার ঋণ নিয়েছেন। গতকাল রোববার বিকাশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ঋণ নিতে আলাদা কোনো নথিপত্রের প্রয়োজন নেই। মাত্র কয়েক ট্যাপে যেকোনো সময় ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত এই জামানতবিহীন ঋণ নেওয়া সম্ভব। ঋণের সর্বোচ্চ মেয়াদ তিন মাস।
ঋণের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী গ্রাহকরা সবচেয়ে বেশি ঋণ নিচ্ছেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে বসবাসকারীরাই বেশি ব্যবহার করছেন এই সুবিধা। এই ঋণ মূলত চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যবসার মূলধন, নতুন উদ্যোগ শুরু এবং জরুরি ভ্রমণ খরচ মেটাতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রথম বছরে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারতেন। পরে এটি বাড়িয়ে ৩০ হাজার করা হয়। চলতি বছরের জুনে চাহিদা বৃদ্ধির কারণে সর্বশেষ সীমা ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। বিকাশ অ্যাপের গ্রাহক লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ করা হয়, কোন গ্রাহক কত টাকার ঋণ পাবেন। যারা এখনও ঋণসেবার আওতায় আসেননি, তারা নিয়মিত অ্যাপ ব্যবহার, সেভিংস বা পেমেন্ট করলে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হয়ে উঠতে পারেন।
ঋণ পরিশোধের দিন অ্যাপে যথাযথ ব্যালেন্স থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিস্তি জমা হয়ে যায়। ইন্টারেস্ট ও প্রসেসিং ফি অ্যাপেই দেখা যায়। নির্ধারিত সময়ের আগে ঋণ পরিশোধ করলে শুধু নেওয়া দিনের জন্যই সুদ দিতে হয়। কিস্তি পরিশোধের তারিখ অ্যাপ নোটিফিকেশন ও এসএমএসে মনে করিয়ে দেওয়া হয়। ডিজিটাল ন্যানো ঋণের পাশাপাশি বিকাশ ও সিটি ব্যাংক ‘পে-লেটার’ সেবা দিয়ে জরুরি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটাও সহজ করেছে। পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকলেও গ্রাহকরা পে-লেটার ব্যবহার করে সরাসরি মূল্য পরিশোধ করতে পারেন।
ঋণসেবার সঙ্গে ক্ষুদ্র আমানত সেবাও রয়েছে। কোনো কাগজপত্র বা ব্যাংক হিসাব ছাড়াই ঘরে বসে সাপ্তাহিক বা মাসিক সঞ্চয়ী আমানত (ডিপিএস) খোলা যায়। এটি চারটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি), ঢাকা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও আইডিএলসি ফাইন্যান্স।
বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, “প্রয়োজনের সময় সরাসরি মুঠোফোনে জামানতবিহীন ডিজিটাল ঋণ পাওয়ার সুযোগ গ্রাহকদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে শক্ত করছে। দুটি স্বনামধন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে আরও বৃহত্তর গ্রাহকগোষ্ঠীর কাছে ঋণসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও জরুরি অর্থের প্রয়োজন থাকা মানুষের কাছে এই ঋণ বিশেষ ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে।”

