দেশজুড়ে চাঁদাবাজির দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, রোজার আগে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে হলে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এখন জরুরি। ট্রাক থেকে পণ্য ওঠানো–নামানো পর্যন্ত নানা অজুহাতে চাঁদা তোলার কারণে পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে বলে অভিযোগ তাদের।
বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনের মিলনায়তনে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানান বিভিন্ন পাইকারি ও বাণিজ্য সংগঠনের নেতারা। সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক আবদুর রহমান খান।
পুরান ঢাকার শ্যামবাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন বলেন, “করপোরেট ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে শকুনের মতো শোষণ করছে। ৩ টাকার মোড়ক দিয়ে পণ্যের দাম ৪০ টাকা বাড়িয়ে দিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।”
তিনি আরো বলেন, “চাঁদাবাজির প্রলয় শুরু হয়েছে। ট্রাক থেকে পণ্য নামাতে যেমন চাঁদা দিতে হয়, আবার ট্রাকে তুলতেও দিতে হয়। অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যেরও এসব চাঁদাবাজদের সঙ্গে দহরম-মহরম রয়েছে। এ অবস্থায় ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।”
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী খোকন বলেন, “ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ দরকার।”
রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার কথা নয়। তবে এজন্য সরকারের বড় আমদানিকারকদের সঙ্গে সরাসরি বসে সমন্বয় করা দরকার। তাদের মতে, মূল সমস্যা পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে নয়, বরং উৎপাদন ও সরবরাহের শৃঙ্খলায় অসাধু প্রভাবের কারণেই দাম বাড়ে।
সভায় এফবিসিসিআই প্রশাসক আবদুর রহমান খান বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি অনুরোধ জানাব, যেন কোনোভাবেই চাঁদাবাজি না হয় এবং পণ্য পরিবহনে বিঘ্ন না ঘটে। একই সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থার উদ্দেশে বলব, ভোক্তার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের স্বার্থও রক্ষা করতে হবে।”
তিনি আরো আহ্বান জানান, “খাদ্যে ভেজাল রোধে ব্যবসায়ী নেতাদের নিজেদের অবস্থান থেকেও দায়িত্ব নিতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।”

