মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে মানহানি ও অপপ্রচারের মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, তিনি সংবাদমাধ্যমটির বিরুদ্ধে ১৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৫০০ কোটি ডলার) ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, নিউইয়র্ক টাইমস ডেমোক্র্যাট দলের প্রচারমাধ্যম হিসেবে কাজ করছে এবং ধারাবাহিকভাবে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অপবাদ ছড়াচ্ছে।
গত সপ্তাহেই ট্রাম্প সংবাদমাধ্যমটিকে আদালতে নেবার হুমকি দিয়েছিলেন। পত্রিকাটি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ২০০৩ সালে অপরাধী জেফ্রি এপস্টেইনের জন্মদিনে একটি যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ নোট ও আঁকা ছবি উপহার দেওয়া হয়েছিল। সেটিতে ট্রাম্পের স্বাক্ষর রয়েছে। তবে ট্রাম্প ও তার সহযোগীরা বলেন, এর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘আজ আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমি নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে ১৫০০ কোটি ডলারের মানহানি ও অপপ্রচার মামলা আনছি। দীর্ঘদিন ধরে তারা আমাকে নিয়ে মিথ্যা, কুৎসা ও অপবাদ ছড়িয়েছে। সেই অপকর্ম শেষ হবে।’ তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিউইয়র্ক টাইমস খোলাখুলিভাবে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করেছে। ট্রাম্প এই পদক্ষেপকে ‘সাংবাদিকতায় সততা ফিরিয়ে আনার আন্দোলন’ হিসেবে দেখছেন। মামলার বিস্তারিত এখনও জানানো হয়নি, তবে এটি ফ্লোরিডায় দায়ের হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সিএনএন-এর খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের আইনজীবীরা ফেডারেল কোর্টে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, নিউইয়র্ক টাইমস ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশ করে ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রচারণা ও উত্তরাধিকারের ক্ষতি করেছে। ট্রাম্পের আইনজীবীরা আগে ডিজনির এবিসি নিউজ ও প্যারামাউন্ট গ্লোবালের সিবিএস নিউজের বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন। তখন গণমাধ্যমগুলো বহু মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ দিতে এবং প্রতিবেদনগুলোর ত্রুটি স্বীকার করতে বাধ্য হয়। এছাড়া, চলতি বছরের জুলাই মাসে ট্রাম্প ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও তার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও মামলা করেন। সেই প্রতিবেদনে এপস্টেইনকে দেওয়া চিঠিপত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। জার্নাল জানিয়েছিল, তারা প্রতিবেদনের যথার্থতায় পূর্ণ আস্থা রাখে এবং আদালতে লড়াই করবে।
সবশেষ এই মামলায় ট্রাম্পের আইনজীবীরা বলেছেন, নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে ট্রাম্পের মানহানি কয়েক বিলিয়ন ডলারের সমান। তাই তারা অন্তত ১৫০০ কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।