মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে অবশ্যই আদালতে তোলা হবে। এ কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আজ (রোববার) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাজুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনী কর্মকর্তাদের হেফাজতে রাখার বিষয়টি আদালতের নজরদারিতে আনতে হবে। সেনাসদরের সংবাদ সম্মেলনের এক দিন পর এই মন্তব্য করা হয়। তিনি আরও বলেন, “সেনাসদর সংবাদ সম্মেলন করেছে, কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাইব্যুনালকে জানানো হয়নি। মিডিয়ায় যা এসেছে, আমরা তা গ্রহণ করি না। আমাদের যদি বলা হয়, কেউ আটক আছে, তবে আইন অনুযায়ী তাঁকে অবশ্যই আদালতের সামনে তোলা হবে। এটাই বিধান।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা ২৫ কর্মকর্তার মধ্যে ১৫ জন এখনো সেনাবাহিনীতে কর্মরত। তাদের মধ্যে একজন বাদে বাকি ১৪ জন এবং অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে থাকা একজনকে হেফাজতে নেওয়ার কথা গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। এদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো হলো:
- আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের দুটি মামলা
- জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় হত্যাকাণ্ডের একটি মামলা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ৮ অক্টোবর এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। এর পর ব্যাপক আলোচনা এবং গ্রেপ্তারের দাবির মধ্যে সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, তারা ন্যায়বিচারের পক্ষে। হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “সংবিধান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন এবং ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী যেখানেই গ্রেপ্তার হোক, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে উপস্থিত করতে হবে। এটি আইনের বাধ্যবাধকতা। আদালত যখন আটক রাখার অনুমতি দেবে, তখনই কাউকে আটক রাখা যাবে। আদালত জামিন দিতে পারেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তখন আদালতের কাছে চলে যায়।”
তাজুল ইসলাম আরো বলেন, “সেনাসদরের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছিল, কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না দেওয়া হলেও তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে কেউ ব্যাখ্যা চাননি। চাইলে আমরা ব্যাখ্যা দেব।”

