রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান তরুণ আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, পরিশ্রম ও সততার বিকল্প নেই। ধৈর্য ধরে কাজ করলে একদিন সফলতা আসবেই। নিজের জীবনের সংগ্রামের গল্প তুলে ধরে তিনি নবীনদের আইনপেশায় টিকে থাকার অনুপ্রেরণা দেন।
গতকাল (মঙ্গলবার) সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ইয়াং লইয়ারদের মধ্যে অনেকে নতুন প্র্যাকটিসে এসে হতাশ হন। আমি যখন ‘ল’ ইয়ার হলাম, তখন বিয়ে করেছি, কিন্তু থাকার মতো বাসা ছিল না। সিনিয়রের সঙ্গে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করতাম। রিকশা ভাড়াও নিজের পকেট থেকে দিতে হতো। স্ত্রী একটি এনজিওতে চাকরি নিয়েছিলেন, বেতন পেতেন সাড়ে চার হাজার টাকা। আমি আইন ও সালিশ কেন্দ্রে আইনজীবী হিসেবে চাকরি নিলাম, বেতন ছিল সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। দুইজনের ১০ হাজার টাকা আয় দিয়ে সংসার শুরু করেছিলাম। তিন হাজার টাকার বাসা ভাড়া করে থাকতাম, প্রতিদিন স্ত্রীর কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে বের হতাম, যাতে রিকশা ভাড়া হয়। এইভাবেই শুরু হয়েছিল আমার পেশাজীবন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাজ শিখতে শিখতেই মক্কেল আসা শুরু করল। আমাকে অসৎ হতে হয়নি। আজ আমি আর্থিকভাবে সচ্ছল, পেশাগতভাবে প্রতিষ্ঠিত। তাই বলব, স্বপ্ন থাকলে শর্টকাট পথে হাঁটার দরকার নেই। সততা ও পরিশ্রমই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।’ অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, প্রতিটি সফল আইনজীবীর পথচলা শুরু হয় অনিশ্চয়তা দিয়ে। শুরুতে মামলার জটিলতা, সিনিয়রের প্রত্যাশা, নিজের দক্ষতা নিয়ে সংশয় কিংবা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি—এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হয়।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাকেও একসময় উপেক্ষা করা হয়েছিল। কাজের সুযোগ ছিল সীমিত। কিন্তু আমি কখনও হাল ছাড়িনি। পেশার প্রতি নিষ্ঠা ও পরিশ্রমই আমাকে আজকের অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ও ডেলিগেটরাও উপস্থিত ছিলেন।