দেশের বিচার ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। ‘সহকারী জজ’ ও ‘সিনিয়র সহকারী জজ’ পদবি আর থাকবে না। এখন থেকে এ পদগুলোর সরকারি নাম হবে ‘সিভিল জজ’ এবং ‘সিনিয়র সিভিল জজ’।
গত রবিবার (২ নভেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানায়।
রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ:
সংসদ ভেঙে থাকার প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধ্যাদেশ জারি করেছেন। অধ্যাদেশটির নাম দেওয়া হয়েছে Civil Courts (Amendment) Ordinance, 2025। এতে বলা হয়, ১৮৮৭ সালের Civil Courts Act–এ আরও সংশোধন প্রয়োজন এবং জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হিসেবে এই অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেছেন।
আইন সংশোধনের মূল অংশ:
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, Civil Courts Act, 1887–এর কয়েকটি ধারা সংশোধন করা হয়েছে। Section 3 এর clause (c) ও (d)–তে ‘Assistant’ শব্দের জায়গায় ‘Civil’ ব্যবহৃত হবে।
- Section 4–এও ‘assistant’ শব্দটি পরিবর্তন করে ‘Civil’ করা হয়েছে।
- Section 13–এর সাবসেকশন (2), (3) ও (4)–এ ‘Assistant’ শব্দের পরিবর্তে ‘Civil’ যুক্ত হয়েছে।
- Section 19, sub-section (2) ও section 10(1)–এও একই পরিবর্তন কার্যকর হয়েছে।
এর ফলে এখন বিচার বিভাগে সহকারী জজ = সিভিল জজ এবং সিনিয়র সহকারী জজ = সিনিয়র সিভিল জজ নামে পরিচিত হবেন।
পেশাগত মর্যাদা নিশ্চিতের দাবি:
এর আগে গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এ নাম পরিবর্তনের দাবি জানায়। সংগঠনটি আইন মন্ত্রণালয়কে পাঠানো চিঠিতে জানায়, ‘সহকারী জজ’ ও ‘সিনিয়র সহকারী জজ’ পদবি বিচারকদের পেশাগত মর্যাদা যথাযথভাবে তুলে ধরে না। এতে বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে বিচারকদের ক্ষমতা ও এখতিয়ার নিয়ে ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়।
সংগঠনটির মতে, ১৯৮৭ সালে ‘মুনসেফ’ পদবি পরিবর্তন করে ‘সহকারী জজ’ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০৭ সালের ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলার রায়ে বিচার বিভাগকে স্বতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হলে এ পদবির পরিবর্তন সময়ের দাবি হয়ে ওঠে।
অ্যাসোসিয়েশন আরও জানায়, বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পরও এই পুরোনো পদবি ব্যবহারে বিচার বিভাগের মর্যাদা ও স্বাধীনতা যথাযথভাবে প্রতিফলিত হচ্ছিল না। তাই পদবি পরিবর্তনে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল।

