Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Sun, Dec 7, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা সংশোধনে কি পরিবর্তন এসেছে?
    আইন আদালত

    পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা সংশোধনে কি পরিবর্তন এসেছে?

    মনিরুজ্জামানNovember 15, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী সাইদুর রহমান প্রায় ২০ বছর আগে দেশ ছেড়ে গেছেন। তিনি সেখানে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন এবং বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়েছেন। কিছু বছর আগে দেশে ফিরে সাভারের হেমায়েতপুরে নিজের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার কাছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকার কারণে খাজনা দিতে পারলেন না।

    বিদেশে অবস্থানকালে এবং দেশে ফিরে এসেও তিনি আইনগতভাবে কাউকে সম্পত্তি দেখাশোনার দায়িত্ব দিতে পারেননি। তাই ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা’ সংশোধনকে তিনি ‘খুশির খবর’ হিসেবে দেখছেন। গেল ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তর্বর্তী সরকার ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ বিধিমালায় সংশোধন আনে। নতুন নিয়মে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক নয়। চাইলে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ ব্যবহার করেও কাজটি করা যাবে। আইনজীবীরা বলছেন, সম্পত্তি লেনদেনে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মূল সমস্যার সমাধান করতে একীভূত আইনগত সংস্কারের প্রয়োজন।

    যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী সাইদুর রহমান বলেন, “আগেরবার দেশে ফিরে অনেকবার ভূমি অফিসে গিয়েছিলাম। চেষ্টা করেও খাজনা দিতে পারিনি। এবার পাওয়ার অব অ্যাটর্নির নিয়ম পরিবর্তনের কারণে আমাদের ঝামেলা কমল। আশা করছি নতুন নিয়মে কাজটা সহজে সম্পন্ন করতে পারব।” প্রবাসী বাংলাদেশিদের সুবিধার জন্যই এই বিধিমালায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। গত ৬ জুন ঈদুল আজহায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “প্রবাসী ভাই-বোনদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে।”

    গেজেট প্রকাশের একদিন আগে, ১১ ফেব্রুয়ারি, সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসীদের ক্ষেত্রে জটিলতা কমাতে ২০১৫ সালের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে। তিনি জানান, আগে প্রবাসীদের পাওয়ার দেওয়ার জন্য পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক ছিল। বাংলাদেশ দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দিতে হতো। অনেক প্রবাসীর সন্তান বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেন না। ফলে প্রক্রিয়ায় বড় জটিলতা হত।

    তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তির পাসপোর্টে ‘no visa required’ থাকলে, জন্ম সনদ থাকলে বা জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেও তিনি বিদেশ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পন্ন করতে পারবেন। এটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোগান্তি কমাতে বড় ভূমিকা রাখবে।”

    আইনজীবী ইসফাকুর রহমান গালিব বলেন, “গেজেটে স্পষ্টভাবে কোনো কারণ বলা না হলেও এটি আইনি প্রক্রিয়ার আধুনিকীকরণ এবং জালিয়াতি রোধের জন্য যাচাই বৈচিত্র্য বাড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। পূর্বের বিধিমালায় পাওয়ার দাতা ও গ্রহীতার পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক ছিল। এটি অনেকের জন্য অসম্ভব, বিলম্ব ও খরচ বাড়াত। প্রবাসীদের জটিলতা ও সাধারণ নাগরিকদের অসুবিধা ছিল এবং জালিয়াতির ঝুঁকি বেড়েছিল।”

    আইনজীবীরা মনে করছেন, এই সংশোধনী পাওয়ার অব অ্যাটর্নির প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করেছে। প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। তবে সম্পত্তি লেনদেনে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির ‘মূল সমস্যা’ সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট আইন একীভূত সংস্কারের মাধ্যমে আরও কার্যকর করা দরকার।

    পাওয়ার অব অ্যাটর্নি কী?

    ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ বা মোক্তারনামা একটি পূর্ণাঙ্গ আইনি দলিল। এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অন্য কাউকে তার আইনি প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন। এই প্রতিনিধি মালিকের পক্ষে সম্পত্তি দেখাশোনা, ক্রয়-বিক্রয়, নিবন্ধন বা অন্য যে কোনো আইনগত কাজ করতে পারেন।

    বাংলাদেশের ‘স্ট্যাম্প অ্যাক্ট, ১৮৯৯’-এর ২(২১) উপধারায় বলা হয়েছে, যে দলিলের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে অন্য কারও পক্ষে হাজির হয়ে কাজ সম্পাদন, ডিক্রি বা রেজিস্ট্রি করা, তত্ত্বাবধান বা অন্যান্য আইনগত কার্যক্রম করার ক্ষমতা দেওয়া হয়, সেটিই পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অর্থাৎ, লিখিতভাবে কারও পক্ষে কাজ করার ক্ষমতা অন্য কাউকে দেওয়াই পাওয়ার অব অ্যাটর্নি। এটি মৌখিকভাবে নয়, অবশ্যই লিখিত আকারে হতে হবে। এই দলিলের মাধ্যমে যাকে মোক্তার বা অ্যাটর্নি হিসেবে নিয়োগ করা হয়, তিনি মালিকের পক্ষে সম্পত্তি বিক্রি, হস্তান্তর, বন্ধক রাখা, খাজনা আদায় বা রক্ষণাবেক্ষণের মতো কাজ করতে পারেন। তবে সব ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করা যায় না।

    মোক্তারনামার ধরন:

    • সাধারণ মোক্তারনামা (আমমোক্তারনামা): প্রতিনিধি মালিকের পক্ষে বিস্তৃত বা সর্বজনীন কাজ করতে পারেন।
    • বিশেষ মোক্তারনামা (খাসমোক্তারনামা): নির্দিষ্ট কাজের জন্য দেওয়া হয়, যেমন একটি জমির বিক্রয় বা নিবন্ধন।

    যে মোক্তারনামা জমিজমা বা স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত নয়, সেগুলো নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নোটারি করানো যথেষ্ট। কিন্তু জমি বা ফ্ল্যাটের মতো স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত হলে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। বিদেশে বসবাসরত কেউ যদি কাউকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে চান, তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে দলিলটি সম্পাদন ও প্রত্যয়ন করতে হয়। এরপর সেটি বাংলাদেশে পাঠিয়ে কার্যকর করা যায়। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি শুধুমাত্র একটি কাগজ নয়। এটি মালিকের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আইনি ক্ষমতা দেয়। এর মাধ্যমে মালিক অনুপস্থিত থেকেও তার সম্পত্তি ও স্বার্থের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেন।

    ১৩০ বছর পর পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইনের সংস্কার:

    অবিভক্ত ভারতে ১৮৮২ সালে ছয়টি ধারার সমন্বয়ে ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অ্যাক্ট ১৮৮২’ প্রণীত হয়। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আইনটির বহুমাত্রিক ব্যবহার দেখা দেয়। সময়ের সঙ্গে আইনের প্রাসঙ্গিকতা কমে যাওয়ায় ২০১২ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম সংস্কারের উদ্যোগ নেন।

    ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিল ২০১২’ সংসদে উত্থাপিত হয়। তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, “বাংলাদেশের অনেক নাগরিক স্থায়ীভাবে বিদেশে বসবাস করছেন। তারা ভূমি ও অন্যান্য স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, বিক্রয় ইত্যাদির ক্ষেত্রে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। বিভিন্ন সেবা গ্রহণ বা ভূমি ব্যবস্থাপনার কাজে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির ব্যবহার বেড়েছে।”

    প্রস্তাবিত বিলে ভূমি ব্যবস্থাপনা, ভূমির উন্নয়ন, হস্তান্তর, বিক্রি, ঋণগ্রহণের বিপরীতে বন্ধক প্রদান ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ‘অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ দেওয়ার বিধান রাখা হয়। সাধারণ কাজে ‘সাধারণ পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ ব্যবহারের সুবিধা দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট মেয়াদে অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নির ক্ষেত্রে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়।

    ভূমি ও ফ্ল্যাটের মূল্যবৃদ্ধি ও জালিয়াতিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে নতুন আইন কার্যকর হলে জালিয়াতি কমবে বলে আশা করা হয়েছিল। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অ্যাক্ট ১৮৮২’ বাতিল করে নতুন পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন সংসদে পাস হয়। এর অধীনে ২০১৫ সালে প্রণীত হয় পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা, যা ২৩ জুলাই গেজেটভুক্ত হয়। এর ১০ বছর পর, অর্থাৎ চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি, অন্তর্বর্তী সরকার বিধিমালার দুটি ধারা সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করে।

    বিধিমালায় কী পরিবর্তন এসেছে:

    সংশোধনের মূল উদ্দেশ্য প্রবাসীদের হয়রানি কমানো। এখন তারা বিদেশি নাগরিকত্ব বা অন্য কোনো পাসপোর্ট থাকলেও জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদের মাধ্যমে বিদেশ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদন করতে পারবেন। বিধি ২-এর দফা ৩-এ দুটি নতুন দফা (৩ক) ও (৩খ) যুক্ত করা হয়েছে। এতে জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রকে ধাপে ধাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া দফা ৬-এর পর নতুন দফা (৬ক) যোগ করা হয়েছে, যেখানে পাসপোর্ট ব্যবহারের বিধান রাখা হয়েছে।

    বিধি ১০-এ বাংলাদেশের বাইরে থেকে সম্পাদিত পাওয়ার অব অ্যাটর্নির ক্ষেত্রে উপবিধি ৪-এ থাকা ‘পাওয়ার দাতার পাসপোর্টের বিবরণসহ’ শব্দগুলোর পরিবর্তে বলা হয়েছে, ‘পাওয়ার দাতার পাসপোর্ট স্টিকার সংবলিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তির বিদেশি পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদের বিবরণসহ’। উপবিধি ৪-এর পর নতুন উপবিধি (৪ক) যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পাওয়ার দাতা প্রমাণিকরণের ছয় মাসের মধ্যে প্রমাণিকৃত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ও তার প্রতিলিপি বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। তফসিল ক-এর ফরম-৩-এর দফা ৪-এ ‘পাওয়ার দাতার পাসপোর্টের বিবরণসহ’ শব্দের পরিবর্তে ‘বিদেশি পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদের বিবরণ’ ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছে।

    আইনজীবী ইসফাকুর রহমান গালিব বলেন, “পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা পরিবর্তন করে পাসপোর্টের পরিবর্তে জন্ম সনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছে। মূলত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ‘No Visa Required (NVR)’ সুবিধা দেওয়া এবং পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য এটি করা হয়েছে।

    “পাসপোর্ট অ্যাক্ট, ১৯২০-এর ধারা ২-এর সঙ্গে সমন্বয় করে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিলে পাওয়ার দাতা ও গ্রহীতার পরিচয় যাচাইয়ের জন্য পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক করা হয়নি। জাতীয় পরিচয়পত্রকে বিকল্প হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। এটি বিশেষ করে প্রবাসীদের জন্য সুবিধাজনক, যারা বিদেশে থাকায় পাসপোর্ট সহজলভ্য নয় বা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে থাকে।”

    আগের বিধিতে প্রবাসীদের ভোগান্তি:

    পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে কাজ করা আইনজীবী কুতুব উদ্দীন প্রবাসীদের ভোগান্তি অনেকবার প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি  বলেন, “অনেক প্রবাসী জমি বিক্রি করতে পারছেন না। কারও নামে হস্তান্তরও করতে পারছেন না। কেউ দেশে ছুটিতে আসলেও তার জমিজমা দেখাশোনার দায়িত্ব কাউকে দিতে পারছিলেন না। কারণ বাংলাদেশি পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হতো না।

    “দেশে এসেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে হত। বিদেশ থেকে দলিলে পাসপোর্টের তথ্যও দিতে হত। এটি প্রবাসীদের জন্য খুবই জটিল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া ছিল।” যাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল, তাদের তেমন সমস্যায় পড়তে হত না, বললেন কুতুব উদ্দীন।

    গত বছরের এপ্রিলে তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফারজানার পাওয়ার অব অ্যাটর্নির কাজ সম্পন্ন করতে সহায়তা করেছেন। ফারজানা ঢাকার রায়েরবাজার এলাকার বাসিন্দা, তার মালিকানাধীন বেরাইদ এলাকার ২৯ শতাংশ জমি বন্ধু মামুনুর রশীদকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে হস্তান্তর করেছেন।

    আইনজীবী কুতুব উদ্দীন বলেন, “সবকিছু প্রস্তুত করে কুরিয়ার মাধ্যমে পাওয়ার দাতার কাছে পাঠানো হয়েছিল। তিনি কনস্যুলার অফিসে নির্ধারিত কর্মকর্তার সামনে সব কাগজপত্র প্রদর্শন করে দলিলে স্বাক্ষর করেছেন। এরপর দলিলটি কুরিয়ার মাধ্যমে দেশে পাঠানো হয়। “দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত শাখা থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়। সবশেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্ধারিত শাখা থেকে নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়। এরপর মামুনুর রশীদ ওই জমি দেখাশোনা, ভোগদখল বা বিক্রয় করতে পারবেন।”

    রাজধানীতে রাজউকের অনুমতি আবশ্যক:

    ২০২৩ সালের মার্চ থেকে রাজধানীতে আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও প্রাতিষ্ঠানিক প্লট বা ফ্ল্যাটের বরাদ্দ ও ইজারা গ্রহণে আমমোক্তার নিয়োগ বা বাতিলের ক্ষেত্রে রাজউকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আগে এই ধরনের নিয়োগ বা বাতিলের বিষয়ে রাজউককে অবহিত করার প্রয়োজন ছিল না। ফলে অনেক ক্ষেত্রে নানা জটিলতা তৈরি হতো। নতুন বিধানের মাধ্যমে এটি নিরসন এবং জমি-ফ্ল্যাট সংক্রান্ত জালিয়াতি কমানো সম্ভব হয়েছে। ফলে এখন রাজউকের অনুমতি ছাড়া কেউ চাইলেই আমমোক্তারনামা করে জমি বা ফ্ল্যাট বিক্রি করতে পারছেন না। একইভাবে কাউকে আমমোক্তার করা বা বাতিল করার জন্যও রাজউকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।

    রাজউকের উপপরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-১) মো. মাহবুবুর রহমান  বলেন, “ভূমিসংক্রান্ত জালিয়াতি রোধে এটি করা হয়েছে এবং বিধানটি কার্যকর রয়েছে। প্রথমে আমাদের কাছে আবেদন করতে হয়। তারপর সুনির্দিষ্ট তারিখে শুনানির জন্য ডাকা হয়, যেখানে সশরীরে উপস্থিত থাকা নিয়ম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি অনুমোদিত হয়।” তবে প্রবাসীদের জন্য সশরীরে উপস্থিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা কিছু জটিলতা সৃষ্টি করায় পরে শিথিল করা হয়। এখন প্রবাসীরা দূতাবাসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠালে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রদান বা গ্রহণের কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।

    আইনের অসামঞ্জস্যতা এখনও রয়ে গেছে:

    আইনজীবী ইসফাকুর রহমান গালিব মনে করেন, ২০২৫ সালের সংশোধন কোনো বড় আইনি অসামঞ্জস্যতা সমাধানের জন্য হয়নি। গেজেটে এই পরিবর্তনের সুনির্দিষ্ট কারণ বলা হয়নি। তবে তিনি মনে করেন, এটি মূলত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘ভ্রমণ-সম্পর্কিত’ পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, “বিধিমালায় কয়েকটি অসামঞ্জস্যতা রয়েছে, যা জালিয়াতি ও অপব্যবহার বাড়ায়। এগুলো ২০২৫-এর সংশোধনে স্পর্শ করা হয়নি। আইনের ধারা ৪-এর অপরিবর্তনীয় পাওয়ার অব অ্যাটর্নির সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট নয়। এটি রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯০৮-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব সৃষ্টি করে।”

    গালিব বলেন, “সংশোধন আংশিকভাবে যৌক্তিক। এতে প্রবাসীদের সুবিধা আছে এবং জালিয়াতি রোধে পরোক্ষ সাহায্য করে। তবে অন্যান্য অসামঞ্জস্যতা উপেক্ষা করা হয়েছে। শুধুমাত্র একটি ‘অ্যাসপেক্ট’ পরিবর্তন অপর্যাপ্ত। মূল সমস্যা, অর্থাৎ সম্পত্তি লেনদেনের জটিলতা, সমাধান হয়নি। দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর করতে হলে একীভূত সংস্কারের প্রয়োজন।”

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    পুঁজিবাজার

    সূচক কমছে, লেনদেন কমছে: গভীর সংকটে শেয়ারবাজারের ভরসা কোথায়?

    December 7, 2025
    বাংলাদেশ

    ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার অর্ধেক ভবন ভেঙে পড়ার আশঙ্কা

    December 6, 2025
    ব্যাংক

    প্রবাসী আয়ে চমক দেখালো কৃষি ব্যাংক

    December 6, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.